জার্মানিতে করোনায় আরো এক লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা
১০ নভেম্বর ২০২১জার্মানিতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে গড় সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ২৩২ পেরিয়ে গেছে৷ পরিস্থিতির লাগাতার অবনতির ফলে করোনা টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষের উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ডাক জোরালো হচ্ছে৷ সেইসঙ্গে হাসপাতালগুলিতে করোনা রোগীর ভিড়ের কারণে গুরুতর অসুস্থ অন্যান্য মানুষের চিকিৎসা ও অপারেশনে বিঘ্ন ঘটায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ দলীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতা বর্জন করে গোটা দেশজুড়ে অবিলম্বে অভিন্ন কড়া বিধিনিয়ম চাপানোর দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷
জার্মানির আগামী সরকার গড়ার লক্ষ্যে এসপিডি, এফডিপি ও সবুজ দলের আলোচনা প্রক্রিয়ায় বর্তমান করোনা সংকট সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার সংসদে এই তিন দলের সম্মিলিত আইনের খসড়া নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হবার কথা৷ সেই প্রস্তাব অনুযায়ী জার্মানির রাজ্যগুলি ভবিষ্যতেও পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনমতো বিধিনিয়ম চালু করার অধিকার পাবে৷ অর্থাৎ ২৫শে নভেম্বর মহামারিজনিত জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হলেও আপাতত আরও ছয় মাস বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করা যাবে৷ ইতোমধ্যেই জার্মানির একের পর এক রাজ্য বদ্ধ জায়গায় শুধু করোনা টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের প্রবেশাধিকারের নিয়ম চালু করেছে৷ অর্থাৎ সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা না নেওয়া মানুষের জন্য পরোক্ষ লকডাউন চাপানো হচ্ছে৷ গোটা দেশের জন্য একই নিয়ম চাপানোর আইনি ভিত্তি দুর্বল হওয়ায় আদালতে সেই নিয়ম বাতিল হতে পারে বলে অনেক রাজনীতিক আশঙ্কা করছেন৷
জার্মানির বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট ক্রিস্টিয়ান ড্রস্টেন শীতের মাসগুলির জন্য ভয়াবহ এক পূর্বাভাস দিয়েছেন৷ তার মতে, করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে সবার জন্য আবার লকডাউনের প্রয়োজন হতে পারে৷ অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ না নিলে জার্মানিতে করোনার কারণে মৃত্যুর তালিকায় কমপক্ষে আরও এক লাখ মানুষ যোগ হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন৷ ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি এমন ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন৷ যে ভাবে হোক, মানুষের মধ্যে যোগাযোগ কমিয়ে মহামারি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি৷ এখনো পর্যন্ত করোনার প্রতিটি ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আনতে একমাত্র সেই হাতিয়ার কাজে লেগেছে৷ নতুন করে সবার জন্য বিনামূল্যে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করেও সংক্রমণের ঢেউ ভাঙা যাবে না বলে তিনি মনে করছেন৷
এ প্রসঙ্গে ড্রস্টেন মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে গত বছরের তুলনায় এ বছরের পরিস্থিতি আসলে অনেক বেশি মারাত্মক৷ কারণ করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট করোনা টিকাপ্রাপ্তদেরও সংক্রমণের বাহক করে তুলেছে৷ এমন মানুষ প্রায় কোনো বাধা ছাড়াই সমাজে সবার সঙ্গে মেলামেশা করছেন৷ ফলে ভাইরাস আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে এবং বিশেষ করে সুযোগ সত্ত্বেও টিকা না নেওয়া মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)