1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্রিসমাস মার্কেটে হামলার প্রভাব পড়তে পারে নির্বাচনে

অলিভার পিপা/জেডএইচ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ফেব্রুয়ারি মাসে জার্মানিতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ সেই নির্বাচনে গত শুক্রবার ক্রিসমাস মার্কেটে হওয়া হামলার প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা৷

https://p.dw.com/p/4oZGG
জার্মানির সংবাদ সংস্থা ডিপিএ এক প্রতিবেদনে বলেছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে সৌদি সরকার আগেই জার্মানিকে জানিয়েছিল৷
মাগডেবুর্গ শহরের ক্রিসমাস মার্কেটে হামলার ঘটনার পর সেখানে যান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসছবি: Michael Probst/AP Photo/picture alliance

মাগডেবুর্গ শহরের ঐ ক্রিসমাস মার্কেটে একটি গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন এক ব্যক্তি৷ এতে পাঁচজন নিহত হন৷ আহত হন ২৩৫ জন৷ নিহতদের মধ্যে নয় বছর বয়সি এক শিশু আছে৷ বাকি চারজন ৪৫, ৫২, ৬৭ ও ৭৫ বছর বয়সি নারী৷

হামলার পর সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তার নাম তালিব এ. (জার্মান প্রেসকোড মেনে পুরো নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না)৷ তিনি সৌদি আরবের নাগরিক৷ ২০০৬ সাল থেকে তিনি জার্মানিতে বাস করছেন৷ তিনি ইসলাম ধর্মের কট্টর সমালোচক এবং জার্মানির অভিবাসনবিরোধী দল এএফডিকে পছন্দ করেন বলে জানা গেছে৷ ২০১৬ সালে এক্স এ তিনি লিখেছিলেন, ‘‘জার্মানিকে রক্ষায় একই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছি আমি আর এএফডি৷''

শুক্রবারের ঐ হামলার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ভুয়া তথ্য ছড়ানো শুরু হয়েছিল৷ এতে দাবি করা হয়েছিল যে, হামলাকারীর সংখ্যা পাঁচজন, তাদের মধ্যে এখনও তিনজন পালিয়ে আছেন৷ হামলাকারীরা ২০১৫ ও ২০১৬ সালে শরণার্থী হিসেবে সিরিয়া থেকে জার্মানিতে এসেছিলেন বলেও গুজব ছড়ানো হয়৷ হামলায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়৷

এসব তথ্য ছড়ানোর পেছনে অন্যতম পরিচিত ব্যক্তি ছিলেন অস্ট্রিয়ার ন্যাশনালিস্ট নেতা মার্টিন জেলনার৷ এরপরই জার্মানির এএফডি দলের রাজনীতিবিদেরা হামলা থেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছিলেন৷ তাদের মধ্যে একজন স্ফেন ট্রিচলার৷ তিনি জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের সংসদে এএফডির ডেপুটি চেয়ারম্যান৷ সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘একমাত্র এএফডিই ঐ ব্যক্তিকে অনেক আগেই (নিজ দেশে) ফেরত পাঠাতো৷'' তখনও তারা জানতেন না যে, হামলাকারী তাদের দলই পছন্দ করেন৷

এএফডি নেতা আলিস ভাইডেন, যিনি দলের চ্যান্সেলর প্রার্থীও, তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘‘এই পাগলামি কবে থামবে?''

জার্মানির কেমনিৎস শহরের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বেনইয়ামিন হ্যোয়নে ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘প্রবণতাটা বেশি বেশি ডানে সরছে৷ ডানপন্থি মতাদর্শ দ্রুত ছড়াচ্ছে৷ বৈশ্বিক মানবাধিকারকে স্বীকার করে গ্রহণ করা খোলা অভিবাসন নীতির দুর্দিন চলছে এখন৷ মাগডেবুর্গের মতো বিপর্যয়মূলক ঘটনা এমন পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাবে৷''

জার্মানির সংবাদ সংস্থা ডিপিএ এক প্রতিবেদনে বলেছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে সৌদি সরকার আগেই জার্মানিকে জানিয়েছিল৷ এই তথ্যের ভিত্তিতে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজার কঠোর সমালোচনা করেছে বিএসডাব্লিউ দল৷ তারাও অভিবাসন নীতি কঠোর করার পক্ষে৷

সাম্প্রতিক সময় জোলিঙ্গেন ও মানহাইম শহরে ছুরি হামলার ঘটনা উল্লেখ করে বিএসডাব্লিউ দলের নেতা সারা ভাগেনক্নেশট জনগণকে রক্ষায় ‘একটি বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা পরিকল্পনা' প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন৷

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যোয়নে মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনে নিরাপত্তা ও অভিবাসন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে পারে৷ সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত পূর্ব জার্মানির রাজ্য নির্বাচনগুলোতে এই প্রবণতা দেখা গিয়েছিল বলে জানান তিনি৷

হ্যোয়নে বলেন, বর্তমানে অভিবাসনকে শুধুমাত্র সম্ভাব্য ও প্রকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে দেখা হচ্ছে৷ জার্মানির দক্ষ কর্মী সংকট কাটাতে যে অভিবাসন সহায়ক হতে পারে সেই আলোচনা পেছনে পড়ে যাচ্ছে৷ মাগডেবুর্গের ঘটনায় এই আলোচনা আরও পেছনে পড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী৷