জার্মানিতে মুসলমানদের ‘মসজিদ কর' দিতে হবে?
২৬ ডিসেম্বর ২০১৮বুধবার ‘ডি ভেল্ট' পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দলের সদস্য টর্স্টেন ফ্রাই বলেন, মসজিদ করের প্রস্তাব ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ'৷ এর ফলে জার্মানিতে ইসলাম ধর্ম বিদেশি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হতে পারবে৷
জার্মানির জোট সরকারের অংশ সামাজিক গণতন্ত্রী দলের অভ্যন্তরীণ নীতি বিষয়ক প্রধান বুর্কার্ড লিশকা'ও মনে করছেন, মসজিদ কর আরোপ হলেজার্মানিতে ইসলাম ধর্মআরো স্বাধীন হবে৷ কর নির্ধারণের প্রস্তাবটি ‘আলোচনা করার মতো বিষয়' বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
উল্লেখ্য, জার্মানিতে ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট ধর্মপালনকারীদের কাছ থেকে গির্জা কর সংগ্রহ করে সরকার৷ এরপর সেই অর্থ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়৷
জার্মানির মতো অস্ট্রিয়া, সুইডেন ও ইটালিতেও খ্রিষ্টান ধর্মপালনকারীদের গির্জা কর দিতে হয়৷
জার্মানিতে মুসলমানদের ক্ষেত্রে এমন কোনো করের ব্যবস্থা না থাকায় মসজিদগুলোকে দানের উপর নির্ভর করতে হয়৷ অনেকসময় এই দান আসে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো থেকে৷ সেক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো রাষ্ট্র দানের বিনিময়ে মসজিদের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণদের মধ্যে মৌলবাদী আদর্শ ছড়ানোর চেষ্টা করে৷
উদাহরণ হিসেবে তুরস্ক সরকার পরিচালিত ‘টার্কিশ-ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রেলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স' বা ডিটিব-এর কথা বলা যেতে পারে৷ এই সংস্থার অধীনে জার্মানিতে প্রায় ৯০০ মসজিদ আছে, যেগুলো পরিচালনা ও ইমামদের বেতনের খরচ আসে তুরস্ক থেকে৷ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে সমালোচনার মুখে পড়ে ডিটিব৷
এছাড়া সৌদি অর্থায়নেও জার্মানিতে অনেক মসজিদ পরিচালিত হয়ে থাকে৷
সরকারি তথ্য বলছে,জার্মানিতে ৪৪ থেকে ৪৭ লাখ মুসলিম বাস করেন৷ এর মধ্যে পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে যাঁরা মুসলমান, তাঁরাও আছেন৷ ফলে ইসলাম ধর্ম পালন করেন এমন মুসলমানের সংখ্যা অনেক কমও হতে পারে৷
মসজিদ প্রতিষ্ঠাতার সমর্থন
রাজধানী বার্লিনের একটি প্রগতিশীল মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সেরান আতেস মসজিদ করের প্রস্তাবের প্রতি তাঁর সমর্থন জানিয়েছেন৷ ‘ডি ভেল্ট' পত্রিকাকে তিনি বলেন, এর ফলে ‘ভবিষ্যতে মুসলমান সম্প্রদায়ের যা প্রয়োজন হবে, তা সদস্যদের দ্বারাই বহন করা সম্ভব হতে পারে'৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, ইপিডি)