জার্মানির নতুন সরকার: ফ্যাশনে পরিচয়?
বুধবার জার্মানিতে নতুন সরকার শপথ নিচ্ছে৷ তিন দলের জোট সরকারের শীর্ষ নেতাদের পোশাক নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থার আভাস দিচ্ছে বলে মনে করছেন ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা৷
‘যেন রক ব্যান্ডের সদস্য’
জার্মানির ভবিষ্যৎ চার মন্ত্রী৷ (বাঁ থেকে) ভাইস চ্যান্সেলর এবং ইকোনমি ও জ্বালানিমন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক, পরিবহন ও ডিজিটাল অবকাঠামো মন্ত্রী ফল্কার ভিসিং এবং অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার৷ কেউ টাই পরেননি৷ আরেকজনের পায়ে স্নিকার৷ জোট সরকার গঠনের আলোচনায় অংশ নিতে তারা এভাবেই গিয়েছিলেন৷ পরে ইতিহাসবিদ ক্লাওদিয়া গাৎস্কা বলেন, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে ইন্ডি রক ব্যান্ডের সদস্য৷’’
ভবিষ্যৎ চ্যান্সেলর
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর হিসেবে বুধবার শপথ নিতে যাচ্ছেন ওলাফ শলৎস৷ ম্যার্কেল সরকারে তিনি অর্থমন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেন৷ ছবিতে এ বছর ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে এভাবেই অংশ নিয়েছেন তিনি৷ টি-শার্টের সঙ্গে ছিল ট্রাউজার৷ নির্বাচনি প্রচারণার সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, চ্যান্সেলর হলে সবসময় টাই পরবেন কিনা৷ উত্তরে বলেছিলেন, বেশিরভাগ সময় পরবেন, সবসময় নয়৷
সাধারণত তারা যা পরেন
২৬ সেপ্টেম্বর জার্মানিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর জোট সরকার গড়তে আলোচনা শুরু করেছিল সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, সবুজ দল ও মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি দল৷ ২৪ নভেম্বর তারা জোট চুক্তিতে উপনীত হয়৷ ছবিটি সেই দিনের৷ খেয়াল করে দেখুন, ডানে থাকা ইকোনমি ও জ্বালানিমন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেক টাই পরেননি৷ তাকে কখনো টাই পরতে দেখা যায়নি৷
‘নতুন শুরুর পক্ষে’
ছবিঘরের প্রথম ছবি ‘রক ব্যান্ডের’ যে সদস্যদের দেখেছেন এই ছবিতেও তাদের দেখতে পাচ্ছেন৷ জার্মান নির্বাচনের দুদিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর তোলা এই ছবিতে সবুজ দল ও এফডিপির শীর্ষ চার নেতাকে দেখা যাচ্ছে৷ ইতিহাসবিদ ক্লাওদিয়া গাৎস্কা বলেন, ‘‘এ বছরের নির্বাচনে যারা জিতেছেন তারা দেখাতে চান যে তারা পরিবর্তনের পক্ষে, নতুন শুরুর পক্ষে৷ নিজস্ব স্টাইল দিয়ে তারা সেটা ফুটিয়ে তুলেছেন৷’’
সমালোচনা
ফ্যাশন ডিজাইনার ভল্ফগাং ইয়ুপ ভবিষ্যৎ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস (বামে) ও ভাইস চ্যান্সেলর রোব্যার্ট হাবেকের (ডানে) পোশাকের কড়া সমালোচনা করেছেন৷ স্পিগেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘তাদের পোশাক অসহায়ত্বের একটা মাত্রার প্রতীক৷’’ হাবেকের মাঝেমধ্যে টাই পরা উচিত বলেও তিনি মনে করেন৷ ‘‘কেউ যদি পোশাককে অবহেলা করে সেটা তার চিন্তাভাবনার ধরনকে প্রতিফলিত করে,’’ বলেন তিনি৷
‘স্বাভাবিক’
স্টাইলের উপর কয়েকটি বইয়ের লেখক ব্যার্নহার্ড রোয়েৎসেল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সময় পালটেছে৷ এখনকার ‘বিজনেস লুক’ অনেকটাই কম ফর্মাল৷ তাই তিন নতুন নেতার (হাবেক, শলৎস, লিন্ডনার) পোশাক-আশাক এখনকার যুগে একেবারেই ‘স্বাভাবিক’৷’’ সাইকোলজিস্ট ইয়েন্স ল্যোনেকার মনে করেন, ঐ তিন নেতা যে সাদা শার্ট পরেন সেটাকে ক্লাসিক বিজনেস লুক মনে করা যেতে পারে, যা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার প্রতীক৷
হাই হিলের বেয়ারবক
ভবিষ্যৎ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক প্রায় সবসময় উঁচু হিল পরেন৷ ফ্যাশন এক্সপার্ট রোয়েৎসেল মনে করেন, ‘‘এটা তাকে স্টাইলিশের চেয়ে সময়ের চেয়ে পেছনে পড়ে থাকা মানুষ বানিয়ে দেয়৷’’ এছাড়া বেয়ারবক যে সবসময় সর্বাধুনিক ফ্যাশন ট্রেন্ড মেনে চলেন তা মনে করেন না রোয়েৎসেল৷
স্নিকার পরে মন্ত্রীর শপথ
বেয়ারবকের সবুজ দলের অন্যতম বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ছিলেন ইয়শকা ফিশার৷ ১৯৮৫ সালে হেসে রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি স্নিকার পরে হাজির হয়েছিলেন (ডানে)৷ পরে ১৯৯৮ সালে তিনি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন৷ তখন অবশ্য ‘আনুষ্ঠানিক পোশাক’ পরেছিলেন তিনি (বামে)৷
সেরা পোশাক পরা ব্যক্তি
পুরুষদের ম্যাগাজিন জিকিউ ২০১৬ সালে জার্মানির বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাসকে জার্মানির সবচেয়ে সেরা পোশাক পরা মানুষ নির্বাচিত করেছিল৷