‘আজকের জার্মানি নাৎসি জমানার মতো'
৬ মার্চ ২০১৭তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান আবার ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন৷ অভূতপূর্ব ক্ষমতা ভোগ করেও তাঁর আশ মিটছে না৷ এক গণভোটের মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্ট পদকে আরও শক্তিশালী করে ক্ষমতার ভিত্তি আরও মজবুত করতে চাইছেন৷ সেই গণভোটে হারের ঝুঁকি কমাতে তিনি জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা তুর্কি নাগরিকদের সমর্থন আদায় করতে চান৷ তাই সে সব দেশে মন্ত্রীদের প্রচারের কাজে পাঠাতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু জার্মানিতে সম্প্রতি একাধিক প্রচারসভা বাতিল হওয়ায় চরম ক্ষোভে ফুঁসছেন এর্দোয়ান৷ তবে জার্মানির বিরুদ্ধে তাঁর বিষাদগার যে মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে, তেমনটা কেউ ভাবেনি৷ মূলত নিরাপত্তার কারণেই জার্মানির একাধিক পৌর কর্তৃপক্ষ এমন প্রচারসভা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷
রবিবার এর্দোয়ান জার্মানির বর্তমান অবস্থান সঙ্গে নাৎসি জমানার তুলনা করেছেন৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, জার্মানিতে নাৎসি জমানা শেষ হয়ে গেছে৷ কিন্তু সেটা এখনো চলছে৷'' প্ররোচনার সুর আরও জোরালো করে এর্দোয়ান চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘‘চাইলে আগামীকালই জার্মানি যেতে পারি৷ আমাকে প্রবেশ করতে না দিলে বা কথা বলতে না দিলে বিদ্রোহ করবো৷''
বলা বাহুল্য, এমন মন্তব্যের ফলে জার্মানিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতারা এর্দোয়ানের বক্তব্যের নিন্দা করছেন৷ অনেকে বলছেন, এমন বেফাঁস মন্তব্য করে এর্দোয়ান নাৎসি জমানার ভয়াবহ ইতিহাস লঘু করে দেখাচ্ছেন৷ তাছাড়া তাঁর নিজের একাধিক নীতি ও পদক্ষেপের মধ্যে একনায়কতন্ত্রের প্রতি তাঁর মোহ ফুটে উঠছে৷ সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদের কণ্ঠ কার্যত বন্ধ করে দিতে তাঁর প্রশাসন একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে৷
জার্মানির সরকার অবশ্য প্ররোচনার ফাঁদ সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছে৷ কিছু মহলে জার্মানিতে এর্দোয়ানের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার যে দাবি শোনা যাচ্ছে, বিচারমন্ত্রী হাইকো মাস তার বিরোধিতা করেছেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল চলতি সপ্তাহেই তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন৷ তিনিও মনে করেন, দুই দেশের মৈত্রির ভিত্তি নষ্ট হতে দেওয়া চলে না৷
উল্লেখ্য, আসন্ন গণভোটের প্রচারের ক্ষেত্রে তুরস্কের জন্য জার্মানির গুরুত্ব অপরিসীম৷ কারণ সে দেশে প্রায় ১৪ লক্ষ ভোটাধিকারপ্রাপ্ত তুর্কি নাগরিক রয়েছেন৷ গত নির্বাচনে তাঁদের একটা বড় অংশ এর্দোয়ানের প্রতি সমর্থন দেখিয়েছেন৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)