1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির হয়ে কাজ করা আফগানদের নিয়তি

১৫ আগস্ট ২০২৩

দুটো পথ খোলা ছিল ৷ এক, তালেবান ধরার আগে দেশত্যাগ, দুই, দেশে ভয়াবহ পরিণতির অপেক্ষা৷ শুরুতে যারা আফগানিস্তান ছেড়েছিলেন তারা ভালো আছেন জার্মানিতে৷ তবে বড় একটা অংশ এখনো তালেবানের নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পাওয়ার অপেক্ষায়৷

https://p.dw.com/p/4VCRS
Usbekistan, Taschkent | Ankunft eines Bundeswehr-Evakuierungsflugs aus Kabul
ছবি: Marc Tessensohn/Bundeswehr/dpa/picture alliance

 

আফগানিস্তানে বিদেশি সৈন্য মোতায়েন শুরু হয় ২০০১ সালের টুইন টাওয়ার হামলার পরে৷ জার্মানিও সৈন্য পাঠায় তখন৷ কিন্তু ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক মিশন সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করার পরই আফগানিস্তানের দখল নিয়ে নেয় তালেবান৷ জার্মান সৈন্যদেরও ফিরিয়ে আনা হয় তাড়াতাড়ি৷ জার্মানির সেনাবাহিনী এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর হয়ে কাজ করা আফগানদের নিয়ে আসার উদ্যোগও শুরু হয় তখন৷

গত জুনে জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ন্যান্সি ফেজারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ২০ হাজারের মতো আফগান নাগরিক জার্মানিতে এসেছেন৷ তাদের অনেকেই ইতিমধ্যে উন্নয়ন সংস্থা এবং জার্মান সেনাবাহিনীতে কাজ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি৷

কিন্তু যারা সময়, সুযোগের অভাবে এখনো আফগানিস্তান ছাড়তে পারেননি, তাদের কী হবে?

২০২১ সালে জার্মানির তখনকার চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছিলেন, ‘‘আফগানদের, বিশেষ করে যে আফগানরা

সেনাসদস্যদের সহায়তায় কাজ করেছেন, নানা সাহায্য সংস্থাকে সহায়তা করেছেন, যারা পুলিশ বাহিনীতে কাজ করেছেন, তাদের আফগানিস্তান ছেড়ে আসতে সহায়তা করার এ উদ্যোগ চলতে থাকবে৷ যেসব মানুষ নিরাপদ এবং স্বাধীন গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছেন, তাদের নিরাপদ রাখার চেষ্টা বজায় থাকবে৷''

ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেও তালেবানবিরোধী যুদ্ধে সহায়তাকারী অনেক আফগানকে জার্মানিতে নিয়ে আসার কাজ দ্রুত করা যায়নি৷ এই ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হিসেবে জার্মানির কৌশলগত ভুলের কথাও উঠে আসছে৷ বলা হচ্ছে, তালেবানবিরোধী আফগানরা প্রথমে পাকিস্তান, ইরান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তানের মতো প্রতিবেশী বা কাছের দেশগুলোতে আশ্রয় নেবেন, সেখান থেকে পরে তাদের নিয়ে আসা হবে- জার্মানির এই পরিকল্পনাই ছিল ভুল৷ কারণ, জার্মানি চাইলেও ওই প্রতিবেশী দেশগুলো আফগান শরণার্থীদের নিতে চায়নি৷

জার্মানির যে আফগানদের দ্রুত, নিরাপদে নিয়ে আসার ব্যাপারে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল না তা কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা ও উন্নয়ন মন্ত্রণালয় (বিএমজেড)-ও সম্প্রতি তা স্বীকার করেছে৷

মন্ত্রণালয়টি জানায়, পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির অভাবের কারণে এতদিনে কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষকে বিএমজেড-এর উদ্যোগেই জার্মানিতে নিয়ে আসার কথা থাকলেও, আনা সম্ভব হয়েছে মাত্র ১১ হাজার ৬০০ জনকে৷

বাকি ৩৪০০ জনের মধ্যে মাত্র ১৬০ জন প্রতিবেশী দেশে সাময়িক আশ্রয় পেয়েছেন৷

এদিকে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে এখনো থেকে যাওয়া আফগানদের সহায়তার নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে জার্মানি৷ তিনি জানান, এ সহায়তা পাবেন মূলত নারী বা ধর্ম কিংবা যৌন-বৈচিত্র্র্যের কারণে নির্যাতন ও হুমকির মুখে পড়া আফগানরা৷

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অবশ্য এ উদ্যোগের সমালোচনা করেছে৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি মনে করে, পাকিস্তান বা ইরান থেকে কেউ এ সহায়তা দাবি করতে পারবেন না- এর অর্থ হলো কিছু মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে আফগানিস্তানে থাকতে বাধ্য করা৷

মার্সেল ফ্যুরস্টেনাউ/ এসিবি