1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানি কি আবার ইউরোপের ‘দুর্বল’ দেশ হওয়ার পথে?

২ আগস্ট ২০২৩

জার্মানির অর্থনীতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে৷ এই পরিস্থিতি বদলের লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না৷ গত কয়েকবছরে একাধিক সংকটে ইউরোপের কেন্দ্রের দেশটির ব্যবসার ধরনের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/4UhT0
জার্মানির অর্থনীতি দুর্বল হচ্ছে ছবি: Joern Pollex/Getty Images

চলতি শতকের শুরুর দিকে ব্যবসা বিষয়ক ব্রিটিশ ম্যাগাজিন ‘দ্য ইকোনোমিস্ট' জার্মানির অর্থনীতি সম্পর্কে একটি রায় দিয়েছে৷ পত্রিকাটির মতে, জার্মানি হচ্ছে ইউরোপের ‘সিক ম্যান'৷ ইংরেজি এই বাগধারার অর্থ হচ্ছে কোন এক শক্তিশালী গোষ্ঠীর সবচেয়ে দুর্বল সদস্য৷ প্রভাবশালী পত্রিকাটির এমন মূল্যায়নের পর নড়েচড়ে বসে জার্মান সরকার, নেয়া হয় নানা উদ্যোগ৷ এবং ২০১৪ সাল নাগাদ বার্লিন ও লন্ডনের একদল অর্থনীতিবিদ জানান যে, ‘সিক ম্যান' থেকে ‘ইকোনমিক সুপারস্টারে' পরিণত হয়েছে জার্মানি৷''

জার্মান অর্থনীতি আবারও ধুঁকতে শুরু করেছে৷ টানা দুই কোয়ার্টার ধরে অর্থনৈতিক আউটপুট পড়তির দিকে৷ সর্বশেষ কোয়ার্টারে জার্মানির জিডিপি আগের কোয়ার্টারের মতোই স্থবির হয়ে আছে৷ আর সব অর্থনৈতিক সূচকও পড়তির দিকেই রয়েছে৷   

মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা বিষয়ক ইন্সটিটিউটের প্রেসিডেন্ট ক্লিমেন্স ফ্যুস্ট এই বিষয়ে বলেন, ‘‘জার্মানির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হচ্ছে৷'' অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য সংস্থাটি প্রতি মাসে নয় হাজারের মতো নির্বাহীর উপর সমীক্ষা পরিচালনা করে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, তিনমাস ধরে পরিস্থিতি নিম্নমুখী এবং চলতি কোয়ার্টারে জিডিপি আরো নিচের দিকে নামবে৷     

জার্মান অর্থনীতির এই নিম্নমুখী আচরনের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে৷ সেগুলোর একটি হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অর্থনৈতিক নীতি৷ ফেডারেল রিজার্ভ, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক এবং অন্যরা সূদের হার বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি কমাতে চায়৷ এতে করে ঋণ নেয়াটা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং গ্রাহকের পক্ষে আরো ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে৷ কিন্তু ধীরে হলেও তার প্রভাব পড়বে জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ খাতে৷ পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নতুন করে বিনিয়োগের আগ্রহও কমে যাবে৷    

সূদের হার বাড়ানো হলে অর্থনীতির গতিশীলতা মন্থর হতে পারে৷ তবে ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো অন্যান্য ইউরোজোনভুক্ত দেশ এই পরিস্থিতি আরো ভালোভাবে সামলেছে৷  

জার্মানিকে মূলত পিছিয়ে রেখেছে অবকাঠামোগত সমস্যা৷ এ দেশের অর্থনীতির ধরন হচ্ছে, সস্তায় জ্বালানি (রাশিয়া থেকে), কাঁচামাল এবং পুরোপুরি প্রস্তুত নয় এমন পণ্য আমদানি করে সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করে উচ্চমানের এবং দামি পণ্য হিসেবে রপ্তানি করা৷ কিন্তু ব্যবসার এই ধরন আর কাজ করছে না৷ গত কয়েকবছরের একাধিক সংকট জার্মানির দুর্বলতা ফুটিয়ে তুলেছে৷ জ্বালানি বেশি দরকার এমন প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপদে পড়েছে৷ আর খরচ বেড়ে যাওয়ায় যেসব প্রতিষ্ঠান উৎপাদন প্রক্রিয়া অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে তার আর ফিরে আসছে না৷

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জার্মানির অর্থনীতিকে আবারো শক্তিশালী করতে হলে জ্বালানি সাশ্রয়ী উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে৷ এজন্য অতীতের প্রযুক্তি বাঁচাতে বিনিয়োগ না করে নতুন প্রযুক্তির দিকে নজর দিতে হবে যা সাশ্রয়ী এবং কার্যকর৷

প্রতিবেদন: হেনরিক ব্যোমে/এআই