‘জার্মানির বিদেশে অভিযানের প্রস্তুতি
৭ অক্টোবর ২০১৪সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে স্বীকার করতে হয়েছে, জার্মানির সামরিক সরঞ্জামের এমনই দশা যে, জার্মানির পক্ষে ন্যাটো সদস্য হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়৷ ওদিকে মন্ত্রী যার বিশদ উল্লেখ করেননি, সে খবর ফাঁস করে দিয়েছে জার্মান মিডিয়া: স্যুডডয়চে সাইটুং দৈনিক গত সপ্তাহান্তে জানায় যে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে একটি নিরপেক্ষ রিপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে, যা-তে জার্মানির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রকল্পগুলিতে ১৪০ রকমের ঝুঁকি ও সমস্যা শনাক্ত করা হয়েছে৷
অবশেষে ফন ডেয়ার লাইয়েন – জার্মান টেলিভিশনের একটি সাক্ষাৎকারে – স্বীকার করেছেন যে, সামরিক বাহিনী ও তার ‘সাপ্লায়ারদের' ভ্রমে যে-সব সরঞ্জাম সংক্রান্ত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তার সমাধান করতে ‘‘(জার্মানিকে) বেশ কিছু কাজ করতে হবে''৷ অপরদিকে, ‘‘আমরা (বিদেশে) আমাদের সামরিক বাহিনী নিয়োগের উপযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে সম্প্রতি কয়েক বছরে বেশ কিছু বিনিয়োগ করেছি'' – ফন ডেয়ার লাইয়েন চান না যে, সে বিনিয়োগের অপচয় হোক৷
ওদিকে ফন ডেয়ার লাইয়েন তথা বার্লিন সরকারের তরফ থেকে বর্তমানে একাধিক নতুন বিদেশি অভিযান তথা প্রকল্পের কথা শোনা যাচ্ছে: পূর্ব ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক মিলিটারি মনিটরিং মিশনে শুধু ড্রোন পাঠানো নয়, সেই সঙ্গে সে' ড্রোন চালানোর জন্য নাকি সৈন্য পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ শোনা যাচ্ছে, জার্মানি নাকি ইরাকে তার কার্যকলাপ বৃদ্ধি করবে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক সাহায্যে গোটা ইরাক জুড়ে পরিকল্পিত আটটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি কেন্দ্র গড়ে তুলবে জার্মানি – উত্তর ইরাকের স্বশাসিত কুর্দিস্তান প্রদেশের রাজধানী এরবিল-এ৷
অবশ্যই ফন ডেয়ার লাইয়েন এই সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, এতগুলি অভিযান সামলানোর মতো পুঁজি, সরঞ্জাম অথবা সেনাবল জার্মান সামরিক বাহিনীর নেই৷ তা সত্ত্বেও তিনি এ খবরের সত্যতা স্বীকার করেন যে, ‘ইউরো হক' নামধারী একটি বেশি উচ্চতার পর্যবেক্ষণ ড্রোন কেনার কথা পুনরায় বিবেচনা করা হচ্ছে৷ গতবছর প্রতিক্ষামন্ত্রী পদে ফন ডেয়ার লাইয়েন-এর পূর্বসূরি টোমাস দেমেজিয়ের ১২০ কোটি ইউরো মূল্যে মার্কিন নরথ্রপ গ্রুম্যান কর্পোরেশনের কাছ থেকে চারটি ইউরো হক ড্রোন কেনার পরিকল্পনা বাতিল করেন, কেননা দৃশ্যত ড্রোনগুলির ওড়ার অনুমতি পেতে আরো ৫০ থেকে ৬০ কোটি ইউরো ব্যয় করতে হতো৷
ফ্রাংকফুর্টার আলগেমাইনে জোনটাগসসাইটুং-এর খবর অনুযায়ী, জার্মান সামরিক বাহিনী এবার ‘ইউরো হক' প্রোটোটাইপ কিনে তা ‘গ্লোবাল হক' ক্যারিয়ারের ওপর লাগানোর কথা বিবেচনা করছে৷ জার্মানির ‘ডের স্পিগেল' সাপ্তাহিকও জানিয়েছে যে, ইউরো হক নিয়ে আলোচনা চলেছে৷ জার্মান সেনাবাহিনীর ‘পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি'-তে যে খাঁকতি আছে, তা নাকি একটি চালকবিহীন ড্রোন দিয়ে পূরণ করা সম্ভব৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স)