সিরিয়ার উদ্বাস্তু
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩গত মার্চ মাসেই জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স-পেটার ফ্রিডরিশ ঘোষণা করেন যে, পাঁচ হাজার সিরীয় উদ্বাস্তুকে যথাশীঘ্র ছোট ছোট দলে করে বিমানযোগে জার্মানিতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ সেই উদ্বাস্তুদের প্রথম দলটি গত বুধবার জার্মানিতে এসে পৌঁছয়৷
কে জার্মানি যেতে পারবে, তা ঠিক করা হবে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু ত্রাণ সংগঠন ইউএনএইচসিআর এবং অপরাপর ত্রাণ সংগঠনের সঙ্গে মিলে – বলে জানিয়েছেন জার্মান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র৷ যে সব উদ্বাস্তুরা লেবাননে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের মধ্য থেকেই এই পাঁচ হাজারকে বেছে নেওয়া হবে৷
বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রধানত তিনটি গোষ্ঠীর মানুষদের বিবেচনা করা হবে: মানবিক বিচারে যাদের সাহায্য প্রয়োজন – যেমন গুরুতরভাবে আহত ব্যক্তি, কিংবা বাবা-মা হারা শিশু কিংবা একা মায়েরা ও তাদের সন্তানরা৷ এছাড়া যে সব উদ্বাস্তুদের জার্মানির সঙ্গে কোনো সংযোগ আছে, যেমন যাদের পরিবারের কেউ জার্মানিতে বাস করেন, কিংবা যাদের কিছুটা জার্মান জানা আছে৷ তৃতীয়ত, যে সব সিরীয়র কোনো বিশেষ যোগ্যতা কিংবা কোয়ালিফিকেশন আছে এবং যারা স্বদেশে সংঘাত শেষ হলে দেশের পুনর্গঠনে সাহায্য করতে পারবেন৷
বাছাই করা সিরীয় উদ্বাস্তুদের প্রথমে দু'বছরের জন্য জার্মানিতে বসবাস ও কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে – অর্থাৎ তারা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী নন, যেমন গোটা কর্মসূচিটা কোনো উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প নয়, বলে ডিডাব্লিউ-কে জানিয়েছেন ইউএনএইচসিআর জার্মানির মুখপাত্র স্টেফান টেলোয়কেন৷
প্রথম কাজ: জার্মান শেখা
পাঁচ হাজার সিরীয়কে প্রথমে দু'সপ্তাহের জন্য ফ্রিডলান্ড এবং ব্রামশে-র তথাকথিত সীমান্ত ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে এবং জার্মানিতে তারা যে সময় কাটাবেন, তার জন্য প্রস্তুত করা হবে৷ প্রথম সপ্তাহে উদ্বাস্তুদের কাজ হবে, কিছুটা জার্মান শেখা৷ এক সপ্তাহ পরে তারা যেন নিজেদের নাম ও পরিচয় জানাতে এবং জার্মানে রাস্তার নাম ও পথ জিজ্ঞাসা করতে পারেন – সেটাই হবে এই ভাষা শিক্ষণ কর্মসূচির উদ্দেশ্য৷
ভাষাশিক্ষার সময় হবে সকালে৷ দুপুরে উদ্বাস্তুদের জার্মানি ও জার্মানির স্কুল ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানানো হবে৷ সীমান্ত ট্রানজিট শিবিরগুলিতে দু'সপ্তাহ কাটানোর পর উদ্বাস্তুদের বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হবে৷ জার্মানি ১৬টি রাজ্য অথবা প্রদেশের সব ক'টি কিছু কিছু করে উদ্বাস্তু নেবে৷
জার্মানির বৃহত্তম রাজ্য হিসেবে নর্থরাইন ওয়েস্টফালিয়া নেবে এক হাজারের বেশি উদ্বাস্তু৷ সে তুলনায় সবচেয়ে ছোট রাজ্য ব্রেমেন নেবে ৫০ জন উদ্বাস্তু৷ তবে জার্মানির ‘‘প্রো আস্যুল'' সংগঠন – যারা উদ্বাস্তু-শরাণার্থীদের জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবার পক্ষে – তারা মাত্র পাঁচ হাজার সিরীয় উদ্বাস্তুকে নেওয়াটাকে অপর্যাপ্ত বলে মনে করে৷ এছাড়া শুধুমাত্র লেবানন থেকে উদ্বাস্তু নেওয়া ন্যায্য বলে মনে করে না তারা, কেননা সিরীয় উদ্বাস্তুরা ঐ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে৷