জার্মান ট্রেন সম্পর্কে যে দশটি বিষয় জানা উচিত
টিকিট, রিজার্ভেশন এবং ট্রেনের ধরন: জার্মানিতে ট্রেনে চলাচলে আগ্রহীদের জন্য এখানে থাকছে দশটি তথ্য বা পরামর্শ যা আপনার কাজে লাগতে পারে৷
আপনি কি বুঝতে পারছেন?
জার্মানির ট্রেন স্টেশনগুলোতে প্রায়ই লাউডস্পিকারে নানা ঘোষণা দেয়া হয়৷ তবে, সেগুলো ট্রেন স্টেশনের অন্যান্য শব্দের কারণে অনেকসময়ই বোধগম্য হয়না৷ তাই, সেসব ঘোষণা নিয়ে বেশি ভাবার দরকার নেই৷ বরং এক্ষেত্রে একটি জনপ্রিয় জার্মান বাগধারা মনে রাখবেন, ‘‘ইস্ ফার্স্টেহে ন্যুর বানহফ’’ অর্থাৎ ‘‘আমি শুধু ট্রেন স্টেশন বুঝতে পারছি৷’’ একথার অর্থ হচ্ছে আপনি ঘোষণার অন্য কোন তথ্যই বুঝতে পারেননি৷
ট্রেনের নানা ধরন
জার্মানির অধিকাংশ শিশুও এটা জানে: ‘দ্য ইন্টারসিটি-এক্সপ্রেস (আইসিই)’ হচ্ছে ডয়চে বানের সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন৷ এসব ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে৷ আইসিই’র পরেই অবস্থান ‘দ্য ইন্টারসিটি’ ট্রেনের৷ ঘণ্টায় দু’শো কিলোমিটার অবধি গতিতে চলা এসব ট্রেন দেখতে আইসিই’র মতো সাদা এবং লাল রংয়ের হলেও এগুলো আসলে একটু পুরনো৷ এই দুই ধরনের ট্রেন ছাড়াও রয়েছে লালরংয়ের ‘রিজিওনাল বান (আরবি)’৷
সব ট্রেন সময়মত আসে না
সময়ানুবর্তিতার জন্য জার্মানদের সুখ্যাতি থাকলেও সময়মত ট্রেন আসার বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে৷ বরং ইদানিংকালে ট্রেন দেরিতে আসার বিষয়টি নিয়ে অনেককে আলোচনা করতে দেখা যায়৷ ডয়চে বান অবশ্য দাবি করেছে, ২০১৮ সালে প্রায় ৭৫ শতাংশ ইন্টারসিটি ট্রেন সময়মত বা নির্ধারিত সময় অতিক্রম করার পাঁচ মিনিটের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছেছে৷
টিকিট অপরিহার্য
জার্মানিতে ট্রেনে ওঠার আগে টিকিট কাটা হচ্ছে সাধারণ নিয়ম৷ তবে, যদি কোন কারণে আপনার স্টেশনের টিকিট ভেন্ডিং মেশিনটি কাজ না করে কিংবা টিকিট কাটার পর্যাপ্ত সময় না পান, তাহলে আইসিই বা ইন্টারসিটি ট্রেনে উঠে সঙ্গে সঙ্গে কন্ডাক্টরের কাছ থেকে টিকিট কিনতে পারেন৷ আরবিতে অবশ্য এই সুবিধা নেই৷ সেটিতে বরং টিকিট না কেটে ওঠায় জরিমানা গুনতে হতে পারে৷
টাকা বাঁচাতে দলবদ্ধ ভ্রমণ
আঞ্চলিক ট্রেনের ক্ষেত্রে অনেক সময় পাঁচজন মিলে এক টিকিট কেটে সস্তায় ভ্রমণ করা যায়৷ একসঙ্গে কোথাও বেড়াতে গেলে এ ধরনের টিকিট লাভজনক হতে পারে৷
সাইকেল নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ কঠিন
আপনার বাইসাইকেলটি যদি ভাঁজ করা না যায়, তাহলে আইসিইতে সেটি নিয়ে চড়া বারণ৷ তবে ইন্টারসিটি এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ট্রেনে একটি বিশেষ কামরা রয়েছে, যেখানে সাইকেলসহ ওঠা যায়৷ বলাবাহুল্য, জার্মানিতে গ্রীষ্মের সময় অনেকেই সাইকেল চালাতে পছন্দ করেন৷ তাই সেসময় ট্রেনে সাইকেলসহ উঠতে চাইলে একটু আগেভাগে স্টেশনে গেলে ভালো৷
সিট রিজার্ভ করাও জরুরি
জার্মানিতে ট্রেনের টিকিটের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিট দেয়া থাকে না৷ দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট কাটার পর নির্দিষ্ট সিট রিজার্ভ করতে বাড়তি টাকা গুনতে হয়৷ ট্রেনের সিটের সঙ্গে থাকা ট্যাগে সেটি রিজার্ভ করা কিনা, সে তথ্য থাকে৷ তাই সিট রিজার্ভ না করে শুধু টিকিট কেটে ট্রেনে উঠলে এমন সিটে বসাই উত্তম যেটি অন্য কেউ রিজার্ভ করেননি৷
সঠিক স্থানে দাঁড়ান
ডয়চে বানের আইসিই ট্রেন ঠিক কোথায় দাঁড়াবে এবং সেটির কোন বগির অবস্থান কোথায় হবে - তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে৷ তাই আপনি টিকিটে উল্লেখিত বগি এবং সিট নম্বর অনুসারে প্লাটফর্মে দাঁড়ালে ট্রেন আসার পর বেশি দৌঁড়ঝাপ করতে হবে না৷
ট্রেনের নানা জায়গা
আপনি কি টেবিলসহ একটি সিট চান নাকি করিডোরে সিট চান - তা সিট রিজার্ভ করার সময় ঠিক করে দিতে পারেন৷ এমনকি ট্রেনের মধ্যে এমন স্থানও আছে যেখানে বসে জোরে কিংবা ফোনে কথা বলা নিষেধ৷ তাই, সিট রিজার্ভ করার সময় এসব বিষয় খেয়াল রাখলে পরবর্তীতে সুবিধা হয়৷
শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
শিশুদের নিয়ে ভ্রমণ করা অভিভাবকদের জন্য ডয়চে বানের আইসিই ট্রেনে রয়েছে বিশেষ কামরা৷ সেখানে শিশুরা শব্দ করলেও কোন সমস্যা নেই৷ তবে, এক্ষেত্রেও সেই কামরা আগে থেকে বুক করে রাখলে ভালো৷ পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুরা ট্রেনে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতে পারে৷ তবে, পনেরো বছর অবধিও এই সুবিধা পাওয়া যেতে পারে যদি তাদের সঙ্গে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছেন এমন কোন অভিভাবক থাকেন৷