জার্মান রাজনীতির লজ্জা
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০২৯ জানুয়ারি জার্মান সংসদে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন জার্মানদের তাদের অতীত না ভুলে যেতে সতর্ক করেন৷ তাঁর মতে, অতীতের ভুলগুলি খেয়াল করলেই বর্তমান জার্মানিতে বাড়ন্ত ইহুদিবিদ্বেষ ও বর্ণবিদ্বেষের মোকাবিলা করা সম্ভব হবে৷ সেই বক্তব্যের এক সপ্তাহ পরই জার্মানির পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ঠুরিঙ্গিয়ার নির্বাচনে জয়ী হয়েছে ব্যবসাবান্ধব রাজনৈতিক দল ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি)৷ এই জয়লাভে এফডিপিকে সরাসরিভাবে সাহায্য করেছে চরম ডানপন্থি দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি বা এএফডি, যাদের ইহুদিবিদ্বেষ কুখ্যাত৷
এই নির্বাচনের ফল তাই গোটা জার্মানিকে নাড়া দিয়েছে৷ এর আগে, ম্যার্কেলের ক্ষমতাসীন দল ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)সহ অন্যান্য বেশ কিছু দলের নেতারা কথা দিয়েছিলেন যে কোনো পরিস্থিতিতেই তারা এএফডির সাথে জোটে যাবেন না৷ প্রকাশ্যে এএফডির বর্ণবিদ্বেষী ও ইহুদিবিদ্বেষী বক্তব্যের বিরোধিতাও করে এসেছেন জার্মান রাজনীতিকরা৷
ইতিহাস কি ভুলতে বসেছে জার্মানি?
এএফডির নেতা ব্যিওর্ন হ্যোকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে মৃত ইহুদিদের স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের নিন্দা জানিয়েছিলেন৷ এই বক্তব্যেরও নিন্দা করেছিল চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ৷
ইনোস পোল মনে করেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যেভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে সিডিইউসহ বাকি রাজনৈতিক দলগুলি, তাই নির্ধারণ করে দেবে জার্মান রাজনীতির ভবিষ্যৎ৷ তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘‘গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দলগুলির এখনই সময় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার৷ শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক নির্বাচনের লজ্জাজনক ফলাফল থেকে ঘুরে দাঁড়াতে নিজেদের স্বার্থের সাথে কতটা আপোষ করবেন তারা, এটাই এখন দেখার৷''
জার্মান ইতিহাসের কালো অধ্যায় থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রসঙ্গে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেন, ‘‘ন্যাশনাল সোশালিজম বা নাৎসিচিন্তা কিন্তু একদিনে আকাশ থেকে পড়েনি৷''
ইনেস পোল মনে করেন যে সাম্প্রতিক এই নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে যে আসলেই ইতিহাস থেকে অনেকটা দূরে সরে এসেছে বর্তমান জার্মানি৷ রিভলিনের সতর্কতা এই সময়ে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক৷ এবং সাধারণ জার্মান নাগরিকের কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়, যে এই ইতিহাসেরও পুনরাবৃত্তি ঘটা অসম্ভব কিছু নয়৷
ইনেস পোল/এসএস