‘লোহাখোর’
২১ মে ২০১২সম্মেলনের প্রথম দিন বিশেষজ্ঞদের সামনে দেখানো হয় প্রামাণ্যচিত্র ‘লোহাখোর’৷
‘লোহাখোর' নামের তথ্যচিত্রটি তৈরি করেন বাংলাদেশি-জার্মান ছবি নির্মাতা শাহীন দিল-রিয়াজ৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটিওরোলোজিক্যাল ইন্সটিটিউটে ছবিটি দেখানোর পর বাংলাদেশের চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙা শিল্পের নানা দিক নিয়ে দর্শকদের সাথে আলোচনায় অংশ নেন নির্মাতা দিল-রিয়াজ৷ সম্মেলনের এক পর্যায়ে ডয়চে ভেলের সাথে আলাপচারিতায় যোগ দেন দিল-রিয়াজ৷
জাহাজ ভাঙা শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের করুণ পরিস্থিতি, বঞ্চনা এবং সেখানে পরিবেশের প্রতি কোন ভ্রূক্ষেপ না করার যে দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে ‘লোহাখোর' নামের প্রামাণ্যচিত্রে, সেই জনগোষ্ঠী এবং শিল্পের কর্তৃপক্ষের উপর ছবিটির প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আসলে শিল্প সমাজ পরিবর্তন করবে এমনটি আমরা মনে করি না৷ তবে এটি মানুষের মনে পরিবর্তনের চিন্তা-ভাবনা ও ভালোর দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ জাগাতে পারে৷ তবুও‘লোহাখোর' ছবিটি তৈরির পরই বেশ কিছু জায়গা থেকে প্রতিক্রিয়া এসেছে৷ বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের যেসব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন যারা এ ধরণের বিষয় নিয়ে কাজ করছে, তারা এটিকে একটি সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার করেছে৷ এছাড়া এ ছবি দেখার পর ইউরোপীয় সংসদ থেকে এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য জোর দিয়ে একটি প্রতিবেদন করা হয়েছিল৷ আর সম্প্রতি বাংলাদেশে পরিবেশ আইনজীবী সমিতি বা বেলা এই শিল্পে পরিবেশের প্রতি অবজ্ঞা করার বিরুদ্ধে আইনগত লড়াইয়ে উপনীত হয়েছিল৷ তারা এই তথ্যচিত্রটিকে আদালতে এবং বিপক্ষ দলের সামনে উপস্থাপন করে একটি সাক্ষ্য হিসেবে৷ ফলে শিল্পের ভেতরের পরিবেশ-পরিস্থিতি সেখানে তুলে ধরতে সুবিধা হয়েছে আইনজীবীদের পক্ষে৷ এর ফলে হয়তো কিছু পরোক্ষ লাভ হয়েছে৷ কিন্তু তবুও এই শিল্পে খুব বড় কোন পরিবর্তন হয়েছে বলে আমার মনে হয়নি৷''
ছবি নির্মাতা শাহীন দিল-রিয়াজ তাঁর সাম্প্রতিক কাজসমূহ সম্পর্কে বলেন, ‘‘লোহাখোর' তথ্যচিত্রটি করার পর আমি বাংলাদেশের হাফেজি মাদ্রাসার শিশুদের নিয়ে ‘কোরানসন্তান' নামে একটি ৯০ মিনিটের তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি৷ এরপর আফগানিস্তানে নিয়োজিত একজন জার্মান সৈন্য এবং একজন আফগান সৈন্যের জীবনচিত্র তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেছি৷ এছাড়া ‘দ্রাইজাট' নামে একটি ইউরোপীয় টেলিভিশনে বিদেশি শিশুদের উপর ধারাবাহিক তথ্যচিত্র সম্প্রচার করা হয়৷ তাদের জন্য আমি বাংলাদেশের দু'টি শিশুর জীবনচিত্র নিয়ে আমি সম্প্রতি দু'টি ছবি করেছি৷ এগুলো অক্টোবর মাসে সম্প্রচারিত হবে বলে আশা করছি৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন