ঝুঁকিপূর্ণ মঙ্গল অভিযান
২ আগস্ট ২০১২মঙ্গল অভিযানের দীর্ঘ পরিক্রমায় একের পর এক নানা দুঃসাহসিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলো৷ কিন্তু মহাকাশ গবেষণার অন্যান্য ক্ষেত্রে বেশ সাফল্য আসলেও মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালাতে গিয়ে বারবারই জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে বিজ্ঞানীদের৷ এবার প্রায় ১২ বছর ধরে বেশ পাকাপোক্তভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আড়াই বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে নাসা৷
মঙ্গল বিজ্ঞান গবেষণাগার নামের এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো একটি ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে পরিচালিত শূন্যে ভারোত্তোলক হিসেবে কাজ করার ক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এর সাহায্যে ছোট গাড়ির আকারের একটি যন্ত্র মঙ্গল গ্রহে বসানোর চেষ্টা করছে নাসা৷ আর এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করা হবে আগামী ৬ই আগস্ট জিএমটি পাঁচটা ৩১ মিনিটে৷
নাসা আশা করছে, চূড়ান্ত মুহূর্তেও মঙ্গলে পাঠানো মহাকাশ যানটির সাথে তাদের যোগাযোগ চালু থাকবে৷ তবে অ্যামেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং মহাকাশ বিষয়ক ঐতিহাসিক হাওয়ার্ড ম্যাকার্ডি দারুণ উৎকণ্ঠার সাথে জানিয়েছেন, ‘‘আমি এমন অন্তত ১০০টি কারণ জানি, যেসব কারণে এই অভিযানটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে৷ অন্যদিকে, এটি সঠিকভাবে কাজ করার সম্ভাবনাময় মাত্র তিন-চারটি কারণ এবং ব্যাখ্যা আমার কাছে রয়েছে৷''
এছাড়া মঙ্গল গ্রহ নিজেও যে খুব রহস্যময় ও ঝুঁকিপূর্ণ সেটিও কারো অজানা নয়৷ কারণ ১৯৬০ সাল থেকে বিশ্বের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলোর অর্ধেকেরও বেশি সংস্থা মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘটেছে হয় ধুলি ঝড়, নতুবা যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা৷ তাই এই অভিযান নিয়েও বিজ্ঞানীদের উৎকণ্ঠার শেষ নেই৷
মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে ৫০ বছর আগের চেয়ে এখন বিজ্ঞানীরা অনেক বেশি কিছু জানতে পেরেছেন৷ বিশেষ করে, মঙ্গলে বিপুল পরিমাণ পানি ছিল এমন তথ্য জানার সাথে সাথে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়েও আশাবাদী এখনকার বিজ্ঞানী মহল৷ নাসা'র বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অভিযান সফল হলে মঙ্গল গ্রহের অজানা ইতিহাস উন্মোচন করা সম্ভব হবে৷
এএইচ / ডিজি (এএফপি)