টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখে পড়াশোনা করছে প্রায় ২৬ হাজার ছাত্র-ছাত্রী৷ এর মধ্যে প্রায় ১৭ শতাংশ হল বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী৷ সবমিলে প্রায় ১৪২ টি বিষয় নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ দিচ্ছে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখ৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বারোটি অনুষদ৷ সেগুলো হচ্ছে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, ব্যবস্থাপনা, প্রকৌশল, স্থাপত্য, মেকালিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটিং, সাধারণ বিজ্ঞান, চিকিৎসাবিদ্যা, খেলাধুলা এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞান৷ এসব বিষয়ে অনার্স, মাস্টার্স এবং পিএইচডি করার সুযোগ দিচ্ছে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখ৷
পুষ্পলতা পাল্লে ভারতের ছাত্রী৷ তিনি হায়দ্রাবাদে পড়াশোনা করেছেন৷ বর্তমানে তিনি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখে নিওরো ইমিউনলজি বিষয় নিয়ে পিএইচডি করছেন৷ অর্থাৎ মাল্টিপল স্কিরসিস নামক জটিল ব্যাধির নিরাময় তিনি খুঁজছেন তার গবেষণার মধ্য দিয়ে৷
পন্ডিচেরি সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স শেষ করার পরপরই জার্মানিতে পিএইচডি করার চেষ্টা করেন তিনি৷ আবেদন পত্র পাঠানোর বেশ কিছুদিন পর পুষ্পলতাকে জার্মানি থেকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ফোন করা হয়৷ তখন ইন্টারভিউয়েই জানানো হয় ডিএএডি-র বৃত্তির জন্য আবেদন করতে৷ এরপর প্রায় ছয় থেকে আট মাস ধরে চলে শুধু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আদান প্রদান৷ এরপর ফেব্রুয়ারি ২০১০ সালে তাকে জানানো হয় যে জার্মানিতে ডক্টরেট করার জন্য তাকে বৃত্তি দিয়েছে জার্মান সরকার৷
নিজেকে কীভাবে পিএইচডি-র কোর্সের জন্য তৈরি করেছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান,‘‘আমি যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছি সবসময়ই সে বিষয় নিয়ে ডক্টরেট করার কথা ভাবতাম৷ মাস্টার্স চলাকালেই আমি নিজেকে প্রস্তুত করেছিলাম৷ বিষয়, গবেষণার প্রস্তাবনা – এসব তখনই গোছানো হয়৷ আমি কোথায় পিএইচডি করতে চাই সেই বিষয়ে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ল্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি৷ এরপরই আমি আবেদন করি৷ জার্মানি বেছে নিয়েছি তার কারণ জার্মানিতে এ বিষয়ে গবেষণা চলছে অনেকদিন ধরে৷ নিওরো সায়েন্সে গবেষণায় জার্মানি শীর্ষে অবস্থান করছে৷ জার্মানি আমার প্রথম পছন্দ ছিল৷''
জার্মানি কেমন? জার্মানিতে থাকার অভিজ্ঞতা কেমন? এ প্রশ্নের উত্তরে পুষ্পলতা জানান,‘‘মে মাসে আমার জার্মানিতে দুই বছর পূর্ণ হবে৷ অভিজ্ঞতা এ পর্যন্ত খুবই ইতিবাচক৷ এখানে গবেষণাকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে৷ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাব নেই৷ না থাকলেও তা সঙ্গে সঙ্গেই যোগাড় করা হয়৷ আর সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় অনায়াসেই৷''
তবে পুষ্পলতা জানান, জার্মান ভাষা জানা থাকলে জার্মানিতে থাকা খুব সহজ৷ সবাই এখানে ইংরেজি বলে না৷ যদিও পুষ্পলতা প্রথম কয়েক মাস জার্মান ভাষা শিখেছেন কিন্তু তার পরেও তা যথেষ্ট নয়৷ টুকটাক কথা বলার জন্য যতটুকু প্রয়োজন তা পুষ্পলতা শিখেছেন৷ বিশেষ করে গবেষণাগারে কাজের সময় জার্মান ভাষার প্রয়োজন৷ কারণ সেখানে অনেক কিছুই বোঝানো হয় জার্মান ভাষায়৷
ভবিষ্যতে কী করতে চান? কোথায় কাজ করতে চান? ভারতে ফিরে যেতে চান নাকি জার্মানিতে থেকে যেতে চান? এ প্রশ্নের উত্তরে পুষ্পলতা পাল্লে বললেন,‘‘আমার বিষয়ে আমি আরো অভিজ্ঞ হতে চাই৷ এই মুহূর্তে আমি শুধু পিএইচডির কথা ভাবছি৷ কীভাবে আরো ভালভাবে গবেষণা চালানো যায়৷ ছোটা-খাটো প্রশ্নের মুখোমুখি সবসময়ই হচ্ছি৷ তবে আমি অবশ্যই এ বিষয়ে পোস্ট ডক্টরেট করতে চাই ৷ আমি নিজেকে পড়াশোনা এবং গবেষণায় পুরোপুরি সম্পৃক্ত করতে চাই ৷ ভবিষ্যতে কোন এক সময় আমি ভারতে ফিরে যাবো সেখানে কাজ করবো, গবেষণা করবো৷''
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই