নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক
২৬ মার্চ ২০১৩ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং সোমবার রওনা হয়ে যান ডারবান অভিমুখে৷ সঙ্গে গেছেন অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্য মন্ত্রী৷ সম্মেলন শুরু হচ্ছে ২৭শে মার্চ৷
ভারতের দিক থেকে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো চীনের নতুন প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং-এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম একান্ত বৈঠক৷ চীনের নতুন প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই ভারত সম্পর্কে চীনের অবস্থান কী হতে পারে তার পাঁচটি সূত্র দিয়ে রেখেছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে৷ যেমন স্ট্র্যাটিজিক যোগাযোগ বাড়ানো, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখা, ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমান সমান সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক ও পারস্পরিক সমঝোতা শক্তিশালী করা এবং বৈশ্বিক স্তরে বিকাশশীল দেশগুলির স্বার্থ ও বৈধ অধিকার রক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা৷
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের চলমান পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে চীনের মাথা ব্যথার বড় কারণ ভারত নয়৷ নতুন নেতৃত্বের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ চীন সমুদ্র৷
চীনের বক্তব্যকে ভারত স্বাগত জানালেও ভারত-চীনের মূল বিরোধের জায়গাগুলির কথা খোলসা করা হয়নি৷ যেমন সীমান্ত বিরোধ, তিব্বত ইস্যু, পাকিস্তানকে পরমাণু সাহায্য ইত্যাদি৷ এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান কী – তা আবার তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী৷ সীমান্ত প্রশ্নে ভারত ভূমিগত বাস্তবতার প্রেক্ষিতে, দেয়া-নেয়ার ভিত্তিতে সমাধানে আগ্রহী৷ আন্তর্জাতিক স্তরে দু'দেশের সহযোগিতা৷
উল্লেখ্য, তিন চার বছর আগের তুলনায় বর্তমানে সীমান্ত ইস্যু মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে৷ মাঝে মাঝে চীনা ফৌজের বিতর্কিত সীমান্তরেখা লঙ্ঘন ও আগ্রাসী টহলদারি বন্ধ আছে৷ ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরিদের স্টেপল ভিসা ইস্যু নিয়ে ভারতের প্রতিবাদে সাড়া দিয়েছে চীন৷ চুপচাপ তা তুলে নেয়া হয়েছে৷ অন্যদিকে, তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার তাওয়াং সফর নিয়ে চীনের যে উষ্মা – তা এখন স্তিমিত৷ গত বছর চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও-এর ভারত সফরে তিব্বতি বিক্ষোভকারীদের দমনে চীন কিছুটা স্বস্তিতে৷
সব মিলিয়ে বলা যায়, দু'দেশের সম্পর্কে মোটামোটি একটা স্থিতিশীলতা এসেছে৷ পাশাপাশি জোর কদমে বেড়ে চলেছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য৷ বর্তমানে যার পরিমাণ প্রায় ৫০ বিলিয়ান মার্কিন ডলার৷ চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও টেলিকম ক্ষেত্রে ভারত সবথেকে পছন্দের গন্তব্য৷
দু'দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন না৷ যেমন উঠবে না ব্রম্মপুত্র নদের উজানে চীনের বিতর্কিত আন্তঃসীমান্ত নদী বাঁধ প্রকল্প ইস্যু৷ পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে চীনের সড়ক ও অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণ৷ তবে আগামী মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ.কে অ্যান্টনি যাচ্ছেন বেজিং-এ৷ তখন বিস্তারিতভাবে প্রতিটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে৷ শুরু হবে চীন-ভারত সম্পর্কের নতুন অধ্যায়৷