ডেঙ্গু ভাইরাস
২১ জুন ২০১২ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আরোগ্য লাভ করেছে এমন একশ'জন মানুষের দেহ থেকে প্রায় দুই লাখ অ্যান্টিবডি সংগ্রহ করেছেন সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানীরা৷ এসব অ্যান্টিবডির মধ্য থেকে একটিকে তাঁরা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন যেটি মানুষের দেহের কোষে সংক্রমণ শুরুর আগেই ডেঙ্গু ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে৷ ‘সায়েন্স ট্রানস্লেশনাল মেডিসিন' নামক সাময়িকীতে বৃহস্পতিবার এই অ্যান্টিবডি উদ্ভাবনের কথা প্রকাশ করা হয়েছে৷
বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁদের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি ‘ডেঙ্গু ভাইরাস এক' - এর সবকিছুই বিনাশ করতে পারে৷ তবে ডেঙ্গু ভাইরাসের মোট চারটি সাবটাইপ রয়েছে৷ এগুলোর সংক্রমণে দেহে প্রচণ্ড খিঁচুনিসহ জ্বর আসে৷ বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা দলের সদস্য এবং সিঙ্গাপুরের ‘ডিউক-এনইউএস গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল স্কুল' এর লক শি-মেই বলেন, ‘‘এই অ্যান্টিবডি ডেঙ্গু ভাইরাসকে এতোটাই আগে ধ্বংস করতে পারে যে, এটা কোন দেহকোষকেই আক্রান্ত করার সুযোগ পায় না৷''
ইঁদুরের দেহে পরীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই অ্যান্টিবডি ভাইরাসটির আমিষ আবরণের উপর এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে, এটিকে আবদ্ধ করে বিনাশ করে ফেলে৷ গবেষক দলের প্রধান এবং সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক পল ম্যাকারি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত গবেষণায় থাকা ডেঙ্গু বিরোধী রাসায়নিক উপাদানগুলোর তুলনায় এই অ্যান্টিবডি অনেক দ্রুত এবং অধিক সংখ্যক ভাইরাসকে বিনাশ করতে পারে৷
এখন বিজ্ঞানীরা সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু ভাইরাস এক-এ আক্রান্ত মানুষের দেহে এই অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে তার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করবেন৷ এছাড়া ২, ৩ এবং ৪ ধারার ডেঙ্গু ভাইরাস বিনাশকারী অ্যান্টিবডি পাওয়া যায় কি না, সেই প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা৷ ম্যাকারি জানান, তাঁর সহকর্মীরা ইতিমধ্যে ডেঙ্গু ভাইরাস দুই-এর ক্ষেত্রে কার্যকর অ্যান্টিবডি'র সন্ধানেও কিছুটা এগিয়েছেন৷ তবে সেক্ষেত্রে তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও প্রাথমিক ধাপেই রয়েছে৷
তিনি আরো জানান, সিঙ্গাপুরে মানুষের দেহে সংক্রমিত ডেঙ্গু ভাইরাসের ৯০ শতাংশই এক অথবা দুই ধারার ভাইরাস৷ ফলে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময়ের মধ্যেই সিঙ্গাপুরের অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করার জন্য দু'টি অ্যান্টিবডি তাঁদের কাছে প্রস্তুত হয়ে যাবে৷
এএইচ / জেডএইচ (রয়টার্স)