তুরস্কের গণতন্ত্র কোন পথে?
৭ নভেম্বর ২০১৬নেতাদের গ্রেপ্তার করার পর তুরস্কের কুর্দিপন্থি পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এইচডিপি পার্লামেন্ট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে৷ এদিকে, তুরস্কের গণতন্ত্র অন্ধকারের পথে পা বাড়াচ্ছে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন৷
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেছেন, ‘‘এটা তুরস্কের ব্যাপার এবং তাদেরকেই ঠিক করতে হবে, তারা কোন পথে যেতে চায়? তাদের সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরবর্তী পদক্ষেপ৷''
রবিবার এইচডিপি জানায়, যতদিন তাদের নেতাদের ছেড়ে দেয়া হবে না, ততদিন তারা পার্লামেন্টের কোনো অধিবেশনে যোগ দেবে না৷ দলের মুখপাত্র আয়হান বিলগেন এক বিবৃতিতে জানান, তারা পার্লামেন্টের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করছেন না৷ তবে তারা কোনো অধিবেশনে যোগ দেবেন না৷ শুক্রবার এইচডিপি-র নেতা ও কর্মীসহ ন'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তুরস্ক সরকারের অভিযোগ, এইচডিপি কুর্দি দল পিকেকে-কে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে৷ যদিও এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে দলটি৷
গত বছর পার্লামেন্টের ১০ শতাংশ ভোট পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে এইচডিপি৷ তাই দলটির সদস্যের উপর এ ধরনের দমন-পীড়ন ভালো চোখে দেখছে না পশ্চিমা বিশ্ব এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর এমা সিনক্লেয়ার-ওয়েব এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘এই নেতারা লাখো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের এভাবে আটক করাটা মোটেও গণতন্ত্রের চর্চা বলে গণ্য করা যায় না৷''
অন্যদিকে, পিকেকে-র কট্টরপন্থি একটি অংশ কুর্দিস্তান ফ্রিডম ফ্যালকনস দল টিএকে শুক্রবার সকালে দিয়ারবকির এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে ১১ জন নিহতের ঘটনাটির দায় স্বীকার করেছে৷ ঐ ঘটনায় আহত হয় শতাধিক৷
অবশ্য এই হামলার জন্য পিকেকে-কেই দায়ী করে আসছিল সরকার৷ তবে এই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়, যখন শনিবার এই হামলায় দায় স্বীকার করে তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)৷
রবিবার তুরস্কের ইউরোপীয় ইউনিয়ন অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার ওমর সেলিককে ডেকে পাঠায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতরা৷ সেখানে তার কাছে তুরস্কের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়৷ তুরস্কে বাক স্বাধীনতা এবং বিরোধী দলের উপর দমন-পীড়নের ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে তাদের সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়টি আবারো অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)