1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তৃণমূলের ভোটেও মারামারি, ব্যালট ছিনতাই, ভাঙচুর

২৬ এপ্রিল ২০২৩

লোকসভা, বিধানসভা ভোটে এই অভিযোগ ওঠে, এবার তৃণমূলের প্রার্থী নির্বাচনেও মারধর, ব্যালট ছিনতাই, বাক্স ভাঙা হলো।

https://p.dw.com/p/4QYx5
অভিষেকের জনজোয়ার যাত্রার সময়ই প্রার্থী নির্বাচনকে ঘিরে এই সংঘর্ষ।
অভিষেকের জনজোয়ার যাত্রার সময়ই প্রার্থী নির্বাচনকে ঘিরে এই সংঘর্ষ। ছবি: Satyajit Shaw/DW

মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের পরিকল্পনা ছিল, দলের কর্মীরাই পঞ্চায়েতের জন্য দলীয় ব্যালটে ভোট দিয়ে প্রার্থী ঠিক করবেন। অভিষেক এখন উত্তরবঙ্গ সফর করছেন। সেখানে তার সভার পরই ব্যালটে ভোট হওয়ার কথা। তা এই ভোটকে কেন্দ্র করে কুচবিহারের মাথাভাঙা, সাহেবগঞ্জ, সিতাইয়ে ভয়ংকর ঘটনা ঘটলো।

দলের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করলেন। বেশ কয়েকজন আহত হলেন। ব্যালট বাক্স আটকে রাখা হলো, ভোট দিতে বাধা দেয়া হলো, ব্যালট বাক্স ভাঙা হলো, এমনকী ব্যালট ছিঁড়েও ফেলা হলো। সাধারণত ভোটের সময় যে ধরনের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা করেন, সেই সব কাজই প্রকাশ্যে করলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কর্মীদের রায় নিয়ে প্রার্থীবাছাই লাটে ওঠার জোগাড়।

এই ঝামেলা অল্প সময়ের জন্য নয়, বেশ কয়েকঘণ্টা ধরে হলো। শুধু মাথাভাঙা নয়, সিতাই, সাহেবগঞ্জ, গোসানিমারি সব জায়গাতেই একই ছবি দেখা গেল। ব্য়ালট পেপার ছিনিয়ে নেয়া, ব্য়ালট বাক্স ভেঙে দেয়া, গায়ের জোরে দলের বিপক্ষ শিবিরের কর্মীদের ভোট দিতে না দেয়া, গুণ্ডামি সবই চললো অবাধে।  পুলিশকে দেখা গেল, সব ফেলে তারা এই মারামারি থামাতে ব্যস্ত।

মঙ্গলবারই রাজ্যজুড়ে জনসংযোগ যাত্রা শুরু করেছেন অভিষেক। এই যাত্রার নাম দেয়া হয়েছে জনজোয়ার যাত্রা। আর তার সভার পর তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা যে কাজটা করলেন, সেটা ভয়াবহ।

অভিষেক যা বললেন

অভিষেক প্রথমে বলেছিলেন, ''দলের কর্মীরা অতি উৎসাহে ভোট দিতে গিয়ে ব্যালট বাক্স ভেঙে ফেলেছেন।'' 

তারপর তিনি দলীয় কর্মীদের বলেছেন, ''কেউ যদি ভাবেন, গায়ের জোরে ব্যালট বাক্সে নিজের নাম জোর করে ঢুকিয়ে প্রার্থী হবেন বা ব্যালট বাক্স ভেঙে দিয়ে সুবিধা পাবেন, তাহলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। পাহারাদারের নাম অভিষেক ব্যানার্জি। এই জন্য আমি নবজোয়ার অনুষ্ঠান শুরু করেছি।''

অভিষেক এই কথা বলার পর রাতেও একই ঘটনা ঘটে। তারপর অভিষেক বলেছেন, এবার তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করাবেন। তিনি দেখতে চান, কে গন্ডগোল করে?

সিস্টেমে থাকার ফল?

বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ''তৃণমূলে কোনো গণতন্ত্র নেই। আর তৃণমূলের ভিতরে যখন এই অবস্থা, তখন রাজ্যের অবস্থা কী হবে, তা অনুমান করতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়।''

কিন্তু পঞ্চায়েতে প্রার্থী হওয়া নিয়ে এরকম মরিয়া আচরণ, মারামারি, নিজেদের দলের কর্মীদের বাধা দেয়া, ব্যালট ছিঁড়ে ফেলার কারণ কি? প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র মনে করেন, ''পঞ্চায়েতে এখন প্রচুর টাকা আসে। গ্রামস্তরে সব পরিকল্পনাই পঞ্চায়ত রূপায়ণ করে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা রূপায়ণ করার জন্য প্রচুর অর্থ সেখানে যায়।''

শুভাশিস ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''রাজ্যে শিল্প নেই, চাকরির অভাব, এই অবস্থায় পঞ্চায়েতে জিততে পারলে হতে পারলে প্রচুর ক্ষমতা চলে আসে। সেজন্য এরকম ছবি দেখতে পারছি আমরা।''

সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''সারাবছর ধরে যে কাজ করতে অভ্যস্ত কর্মীরা, তারা সেটাই করেছে। তারা তো একটা সিস্টেমের মধ্যে থাকে। তার থেকে বেরোবে কী করে?  ফলে তাদের এই আচরণ নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই।''

জিএইচ/কেএম(পিটিআই, আনন্দবাজার, নিউজ১৮)