তৃণমূল নেতাকে রুখতে বাবুল সুপ্রিয়ের বিদ্রোহ
১৮ ডিসেম্বর ২০২০একদিকে দল ভাঙছে তৃণমূলের, অন্য দিকে রাজ্য বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে আদি-নব্য বিতর্ক। যে বিতর্কে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছেন বিজেপির সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। আলোচনার কেন্দ্রে আসানসোলে তৃণমূলের সাবেক বাহুবলী নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আদি মানে বিজেপি-র যে নেতারা আগে থেকে ছিলেন, নব্য মানে তৃমমূল বা অন্য দল থেকে আসা নেতারা।
বৃহস্পতিবারশুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি জিতেন্দ্রও তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আসানসোলের এই প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়ের বিতর্ক বহুদিনের। এক সময় জিতেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করতেন আসানসোল-দুর্গাপুরের রাজনীতি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাবুল তৃণমূলের সেই খাস তালুকে থাবা বসান। তৃণমূলের দোলা সেনকে হারিয়ে বিজেপির টিকিটে জয় লাভ করেন। ২০১৯ সালেও মুনমুন সেনকে হারিয়ে তিনি দ্বিতীয়বার আসানসোলের সাংসদ হয়েছেন। আসানসোল-দুর্গাপুরে এখন বিজেপির দাপটও যথেষ্ট। অর্থাৎ, জিতেন্দ্র খানিকটা হলেও জমি হারিয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, জিতেন্দ্রের নেতৃত্বে আসানসোলে লাগাতার বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। বহু নেতা জেলে। সবই জিতেন্দ্রের কারণে। সেই জিতেন্দ্র তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শনি এবং রোববার অমিত শাহের পশ্চিমবঙ্গ সফর চলাকালীন তিনি যোগ দিতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা। বাবুলের আপত্তিও ঠিক সেখানেই।
বৃহস্পতিবার রাতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বাবুল লিখেছেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় এতদিন যারা বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে, তারাই এখন বিজেপিতে যোগ দেবে বলে শুনছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বস-রা নেবেন। কিন্তু আমি আমার আপত্তির কথা জানাবো।'
শুধু লেখা নয়, একটি ভিডিও মেসেজও আপলোড করেছেন বাবুল। সেখানে সরাসরি জিতেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, যাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনিই যদি এখন বিজেপিতে যোগ দেন, তা হলে তা তাঁর পক্ষে এবং দলের কর্মীদের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন।
জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে ডয়চে ভেলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি এখনো পর্যন্ত কিছু জানাননি। তৃণমূল নেতা সৌগত রায় ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''বিজেপির এই দল ভাঙানোর খেলা কাউন্টার প্রোডাক্টিভ হবে।'' অন্য দিকে রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''জিতেন্দ্র নিজে দলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানাননি। ফলে এ বিষয়ে আলাদা করে মন্তব্য করার অর্থ হয় না। তবে নির্বাচনের আগেই তৃণমূল ভেঙে পড়বে বলে মনে হচ্ছে।''