ত্রিশ বছর হয়ে গেল, এইডস’এর এখনো টিকা নেই
৫ জুন ২০১১ত্রিশ বছর আগে সমকামী পুরুষদের এক রহস্যময় রোগ হিসেবে এইডস ব্যাধি দেখা দেয়৷ সেযাবৎ বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন কোটি মানুষ এই ব্যাধিতে প্রাণ হারিয়েছেন, সংক্রমিত হয়েছেন আরো ছয় কোটি৷ তাই ‘এ্যাকোয়ার্ড ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম' বা এইডস'এর আরেক নাম হল মারণ ব্যাধি৷ ৫ই জুন, ১৯৮১ সালে এই ব্যাধি সম্পর্কে প্রথম লেখা হয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি রিপোর্টে৷ মাত্র দু'পাতার রিপোর্ট৷ তা'তে বলা হয়েছিল পাঁচজন সমকামী, কমবয়সি পুরুষদের কথা, যারা একটি অতীব বিরল, সংক্রমণাত্মক ফুসফুসের রোগে ভুগছিল৷ লস এঞ্জেলেসের তিনটি হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছিল৷ রিপোর্ট বার হবার আগেই তাদের দু'জন মারা যায়৷ তবুও ৫ই জুনকে এই অভিশপ্ত ব্যাধির জন্মদিন বলার কোনো কারণ নেই, কেননা রোগটা বহুদিন ধরেই মানুষের সঙ্গী৷ শুধু তার পরিচয়টা জানা বাকি ছিল৷
বর্তমানে প্রতিদিন আনুমানিক আরো সাত হাজার মানুষ এই রোগে সংক্রমিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ তাদের মধ্যে এক হাজার শিশু৷ ধনী দেশগুলোতে এ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ দিয়ে এইডস'কে প্রায় একটি ক্রনিক ব্যাধিতে পরিণত করা হয়েছে বটে, কিন্তু দরিদ্র দেশগুলিতে এই রোগ এখনও তার সংহার মূর্তিতেই দেখা দিচ্ছে৷ যদিও এখানেও আনন্দের খবর দিয়েছে জাতিসংঘের এইডস কর্মসূচি ইউএনএইডস: নতুন সহস্রাব্দের প্রথম দশ বছরে ৩৩টি দেশে এইডস সংক্রমণের সংখ্যা অন্তত ২৫ শতাংশ কমে গেছে৷ দরিদ্র এবং ‘মধ্যবিত্ত' দেশগুলিতেও ৬০ লাখের বেশি এইডস রোগী সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন৷
টিকার ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এইডস যে ভাইরাস থেকে হয়, সেই হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা এইচআইভি সংক্রমণের সাথে সাথে এ্যাতো দ্রুত বদলাতে থাকে যে, রোগীর রক্তধারায় সামান্য তারতম্যের বিভিন্ন ভাইরাস থাকতে পারে৷ শরীরের ইমিউন সিসটেমকে সেই সব ধরণের ভাইরাসের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে, যদিও এইচআইভি ঠিক ঐ ইমিউন সিসটেমের কোষগুলিতেই বংশবৃদ্ধি করে এবং কোষগুলিকে ধ্বংস করে৷ কাজেই এহেন একটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা বার করাটা বিজ্ঞানীদের পক্ষে একটি বড় চ্যালেঞ্জ৷ গত ১২ বছরে চারটি বড় প্রচেষ্টা হয়েছে৷ বিশ বছর গবেষণার পর মহিলাদের ব্যবহারযোগ্য একটি মলম আবিষ্কৃত হয় ২০১০ সালে৷ দক্ষিণ আফ্রিকায় ৯০০ মহিলাকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে দেখা গেছে, এই মলম ব্যবহার করলে সংক্রমণের আশঙ্কা ৪০ শতাংশ কমে যায়৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই