থাইল্যান্ডে প্রতিবাদ
২৬ নভেম্বর ২০১৩আন্দোলনকারীরা সোমবার ব্যাংককের অর্থ মন্ত্রণালয় দখল করা পর রাত্রে সেখানেই শিবির গাড়ে৷ দৃশ্যত তারা এই অর্থ মন্ত্রণালয়কেই তাদের বিক্ষোভের কেন্দ্র করতে চাইছে৷ মঙ্গলবার তারা হাজারে হাজারে রাজধানী ব্যাংককের অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে৷ অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড়া পরিবহণ, কৃষি এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়গুলিও আপাতত বন্ধ হয়ে আছে৷
মঙ্গলবার মূল বিক্ষোভের স্থান হয়ে দাঁড়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ আন্দোলনকারীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে সমবেত হয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মীদের বেরিয়ে আসতে বলে৷ সেই সময় বিক্ষোভকারীরা রায়ট পুলিশের সম্মুখীন হয়৷ আন্দোলনকারীদের দাবি: প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগ৷ তাদের অভিযোগ: ইংলাকের ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রাই পিছন থেকে এই সরকার চালাচ্ছেন৷ সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন ২০০৬ সালে সামরিক বাহিনীর দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হন৷ তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল৷ থাকসিনের বোন ইংলাক ২০১১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷
গত রবিবার লক্ষাধিক আন্দোলনকারী ব্যাংককের পথে নামে ‘‘থাকসিন শাসনের'' অন্ত ঘটানোর জন্য৷ এক মাস আগে এই আন্দোলনের সূচনায় তারা সরাসরি ইংলাকের পদত্যাগই দাবি করছিল, কিন্তু এখন তাদের দাবি হলো, থাই রাজনীতি থেকে সিনাওয়াত্রা চক্রকে দূর করতে হবে৷ সরকার বিরোধী ডোমোক্র্যাটিক পার্টি এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও এই আন্দোলন ২০০৮ সালের মতোই সহিংস হয়ে উঠতে পারে৷ সেবার আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর অফিস তিন মাসের জন্য দখল করে রেখেছিল৷
ওদিকে মঙ্গলবার বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সংসদে ইংলাকের বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু করেছে, যদিও সে অনাস্থা প্রস্তাব সফল হবার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ ইংলাক স্বয়ং সকলের প্রতি শান্ত থাকার আবেদন করেছেন এবং বিক্ষোভ আন্দোলনের নেতৃবর্গের সঙ্গে গোলটেবিলে বসার প্রস্তুতি ঘোষণা করেছেন৷ অপরদিকে তিনি আন্দোলন থামানোর জন্য বলপ্রয়োগ না করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
আবার এ-ও সত্য যে, ইংলাক সোমবার রাত্রেই বিশেষ নিরাপত্তা আইনের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে গোটা রাজধানীকে তাঁর আওতায় এনেছেন৷ গত আগস্ট মাস যাবৎ ব্যাংককের তিনটি এলাকা ঐ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনের আওতায় রাখা হয়েছে – কেননা ঐ এলাকাগুলিতে তখনই বিক্ষোভ মাথা চাড়া দিচ্ছিল৷ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনের বলে কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি করতে পারেন, রাস্তা বন্ধ করে দিতে পারেন, বিশেষ বিশেষ ভবনে প্রবেশাধিকার সীমিত করতে পারেন এবং বিশেষ বিশেষ এলাকায় মুঠোফোন ইত্যাদির ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে পারেন৷
এই সরকার বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয় গত মাসে, যখন শাসক দল একটি বিতর্কিত আইন পাশ করার চেষ্টা করে যার উদ্দেশ্য ছিল থাকসিন এবং অপরাপর রাজনীতিকদের রাজনীতি সংক্রান্ত অপরাধের দায় থেকে মুক্ত করা – অন্তত আইনটির সমালোচকদের এই ছিল অভিমত৷ থাই সেনেট পথবিক্ষোভের অন্ত ঘটানোর আশায় বিলটি প্রত্যাখ্যান করা সত্ত্বেও বিক্ষোভ আন্দোলন আরো জোরদার হয়েছে৷
বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবারকে ‘‘বিশ্রাম দিবস'' ঘোষণা করে জানিয়েছে, বুধবার সারা দেশে আন্দোলন করা হবে৷
এসি/ডিজি (এপি, রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)