দিল্লিতে পরমাণু শক্তি-বিরোধী বিক্ষোভ
২৫ মার্চ ২০১১পরমাণু শক্তি-বিরোধী সংগ্রাম ফোরামের অধীনে দেশের ডজন খানেক নাগরিক সংগঠন আজ সংসদ ভবনের অদূরে ভারতের পরমাণু বিভাজন ও পরমাণু অস্ত্রসহ সবরকম পরমাণু কর্মসূচি ও প্রকল্প স্থগিত রেখে দূষণমুক্ত বিকল্প বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখায়৷ এবং নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে চলতি পরমাণু কেন্দ্রগুলির সুরক্ষা ব্যবস্থার কড়া পর্যালোচনা করার কথা বলে৷ পরিবেশবাদী সংগঠন ‘গ্রিনপিস' মহারাষ্ট্রের জায়তাপুরে প্রস্তাবিত পরমাণু প্রকল্প বাতিলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা দেয় ৭০ হাজার আবেদনপত্র৷
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিকল্প শক্তি সংস্থার উপদেষ্টা শান্তিপদ গণচৌধুরী এই প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘ভারত যদি ৯ শতাংশ জিডিপি বজায় রাখতে পারে, তাহলে ২০৩০ সালে ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদা দাঁড়াবে ৯ লক্ষ মেগাওয়াটের মত৷ এটা আমরা সৌরশক্তি থেকেই পেতে পারি৷ পরমাণু বিদ্যুৎ যেদিন থোরিয়াম-ভিত্তিক হবে বা পরমাণু শক্তি ঝুঁকি যেদিন একেবারেই থাকবে না, তখন পরমাণু শক্তি এলে আপত্তির কারণ নেই৷ সেটা আসতে সময় লাগবে আরো তিরিশ-চল্লিশ বছর৷ কিন্তু ইউরেনিয়াম জ্বালানি-ভিত্তিক পরমাণু শক্তির ভবিষ্যৎ বিপদ তথা জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ থেকে কী ধরণের বিপর্যয় আসতে পারে তাও অজানা৷ এই রকম অজানা বিপদের ঝুঁকির মধ্যে যাওয়াটা কাজের কথা নয়৷ ভারতের মত ঘন বসতিপূর্ণ বিপুল জনসংখ্যার দেশে এতটুকু তেজস্ক্রিয়তা বিকিরণে মারা পড়বে লক্ষ লক্ষ লোক৷ কাজেই পরমাণু শক্তির দিকে না গিয়ে এবং কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ধীরে ধীরে কমিয়ে সৌরশক্তি ও অন্যান্য অপ্রচলিত শক্তির দিকে বেশি করে নজর দেয়া দরকার৷''
তা সত্ত্বেও সরকারের পরমাণু শক্তির ওপর জোর দেবার কারণ,পরমাণু লবির তথাকথিত কৌলীন্য৷ এত লোকের ঘাতক, ভবিষ্যৎ অজ্ঞাত তবু এই বিদ্যুতের পেছনে কেন এতো বিনিয়োগ, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে৷ পাশাপাশি ৯ লক্ষ মেগাওয়াটের সম্ভাবনাময় সৌর শক্তির বিকাশে দেশে নেই কোন সুসংগঠিত সংস্থা৷ জাপানের ফুকুশিমা দাইচি মনে করিয়ে দিল আমরা কতটা ভুল পথে চলেছি৷ এটা বিপরীতমুখী করতে দরকার সর্বোচ্চ স্তরে নীতিগত সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা৷ সেটা হলে অদূর ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ তার নিজের জায়গা খুঁজে পাবে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন