দুই মন্ত্রীর পদত্যাগে বিপাকে মাক্রোঁ
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮গত সপ্তাহে এক লাইভ রেডিও ইন্টারভিউয়ে মাক্রোঁর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তাঁর পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী নিকোলা উলো৷ মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন খেলাধুলা বিষয়ক মন্ত্রী লরাঁ ফ্লেসেল৷
ফ্লেসেল অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর পদত্যাগের কারণ ব্যক্তিগত৷ পাশাপাশি ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের প্রতি ‘আনুগত্য' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতিও জানিয়েছেন ফেন্সিং-এ সাবেক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ফ্লেসেল৷
উলো অবশ্য সরাসরি আঙুল তুলেছেন মাক্রোঁর দিকে৷ উলো বলছেন, পরিবেশ বিষয়ে সরকারের ফাঁকা প্রতিশ্রুতিতে তিনি ‘বীতশ্রদ্ধ'৷ নিজের মন্ত্রীর এমন প্রকাশ্য মন্তব্যে স্বভাবতই যার পর নাই বিব্রত ফরাসি প্রেসিডেন্ট৷ প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের দেশকে সরিয়ে নেয়ার পর মাক্রোঁ ট্রাম্পকে অনেকটা ব্যঙ্গ করেই ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘মেক আওয়ার প্লানেট গ্রেট অ্যাগেইন'৷
মন্ত্রীসভায় নতুন মুখ
উলোর পদত্যাগে নতুন পরিবেশমন্ত্রীর নাম ঘোষণার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ফ্লেসেল৷ পরে প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে জানানো হয়, ফ্লেসেলের জায়গা নিচ্ছেন রোকসানা মারাসিনিয়ানু৷ মারাসিনিয়ানু ২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকে ব্যাকস্ট্রোকে রৌপ্যপদক জয়ী সাঁতারু এবং ১৯৯৮ সালের বিশ্ব চ্যম্পিয়ন৷
অন্যদিকে, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে পার্লামেন্ট স্পিকার ফ্রাসোয়াঁ ডি রোজিঁকে৷ ডি রোজিঁ পরিবেশবাদী দল গ্রিন পার্টির একজন এমপি ছিলেন৷ তবে গত বছর তিনি যোগ দেন ম্যাক্রোঁর রিপাবলিক অন দ্য মুভ পার্টিতে৷ পারমাণবিক জ্বালানি বন্ধে কিছুটা ধীরে চলো নীতি অনুসরণের উদ্যোগে সমর্থন দিয়ে মাক্রোঁর বেশ আস্থা অর্জন করেছেন ডি রোজিঁ৷
জনপ্রিয়তায় ধস
মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আসাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখতে চাচ্ছেন ম্যাক্রোঁ৷ নতুন মন্ত্রীরা নতুন উদ্যম নিয়ে কাজ শুরুর করবেন বলেও আশা তাঁর৷
গ্রীষ্মকালীন অবসরে থাকার সময়ও বডিগার্ড কেলেঙ্কারি তাঁর পিছু ছাড়েনি৷ পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও প্রত্যাশার তুলনায় বেশ কম৷ ফলে কমেই চলেছে মাক্রোঁর জনপ্রিয়তা৷
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, মাক্রোঁর ১৬ মাসের শাসনামলে খুশি কেবল ৩১ শতাংশ ফরাসি৷ সকল বয়সের মানুষের কাছেই কমেছে তাঁর জনপ্রিয়তা৷
প্রথম ১৬ মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলঁদের জনপ্রিয়তার চেয়েও নিচে এখন ম্যাক্রোঁর অবস্থান৷ ধীরে ধীরে ওঁলদের জনপ্রিয়তা এতটাই কমে গিয়েছিল যে, একসময় তিনি নিজেই আর দ্বিতীয়বার নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন৷
ম্যাক্রোর ভাগ্যেও কি তেমনটাই ঘটতে চলেছে? আগামী দিনগুলোতে ফরাসি সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে এ প্রশ্নের উত্তর৷
এডিকে/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)