দুর্দান্ত সৌদি আরবের কাছে অসহায় আর্জেন্টিনা
২২ নভেম্বর ২০২২৪৮ মিনিটে আল-শেরির প্রথম গোলের পর ৫৩ মিনিটে পেনাল্টি এরিয়া থেকে অসাধারণ গোল করেন আল-দোসারি৷ আর্জেন্টিনার দুজন ডিফেন্ডারকে দারুণ কৌশলে পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে আরও একজনকে বোকা বানিয়ে নেয়া আল-ডোসারির শটটি গোলরক্ষক মার্তিনেজের হাত ছুঁয়ে গোল হয়ে যায়৷
তবে দশ মিনিটের সময় পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন মেসি৷ এর মাধ্যম আর্জেন্টিনার জার্সিতে সর্বোচ্চ চারটি বিশ্বকাপে গোল করার রেকর্ড করেন তিনি৷ সব মিলিয়ে পঞ্চম ফুটবলার হিসেবে চারটি আলাদা বিশ্বকাপে গোল করলেন মেসি৷ এর আগে পেলে, উয়ে সিলার, মিরোস্লাভ ক্লোসা ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এই কীর্তি গড়েছিলেন৷
প্রথমার্ধে অফসাইডের কারণে মেসির একটি ও লাওতারো মার্তিনেজের দুটি গোল বাতিল হয়ে যায়৷ পুরো খেলায় মোট ১০ বার অফসাইড হয় আলবিসেলেস্তেরা৷
দুই গোলে পিছিয়ে থাকার পর বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা৷ তবে সৌদি গোলরক্ষক মোহাম্মদ আল-ওয়াইজ ও রক্ষণভাগের দক্ষতায় সফলতা পায়নি তারা৷ ফলে ম্যাচের ৭০ শতাংশ সময় খেলা নিয়ন্ত্রণে রেখেও হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মেসিদের৷
দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর সৌদি দর্শকদের ধ্বনিতে স্টেডিয়াম কম্পিত হয়ে ওঠে৷ এরপর গোলরক্ষকের প্রতিটি সেভের সময় তারা আরও উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে৷ মেসিকে গোলে শট নেয়া থেকে রুখতে সমর্থ হওয়ার পর হাসান আল-তামবাক্তির প্রতিক্রিয়া দর্শকদের আরও উত্তেজিত করে তোলে৷
এটাই সবচেয়ে বড় আপসেট: গ্রেসনোট
ডাটা কোম্পানি নিলসেন গ্রেসনোট বলছে, সৌদি আরবের জয় বিশ্বকাপের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আপসেট৷ এর আগের আপসেটটি ছিল ১৯৫০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জয়৷
ব়্যাংকিং সিস্টেম এবং জটিল ফর্মুলা ব্যবহার করে গ্রেসনোট বলছে, মেসিদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের জেতার সুযোগ ছিল মাত্র ৮.৭ শতাংশ৷ আর ১৯৫০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের সম্ভাবনা ছিল ৯.৫ শতাংশ৷
প্রতিক্রিয়া
খেলা শেষে মেসি বলেন, ‘‘এটি অনেক বড় এক ধাক্কা, এমন পরাজয় ব্যাথা দেয়, তবে আমাদের নিজেদের উপর আস্থা রাখতে হবে৷’’ তবে তারা সহজে হাল ছেড়ে দেবেন না বলেও জানান তিনি৷ মেক্সিকোর বিরুদ্ধে আমরা জেতার চেষ্টা করবো,’’ বলেন তিনি৷
ইংলিশ কিংবদন্তি ফুটবলার গ্যারি লিনেকার মনে করছেন এটি বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম সেরা আপসেট৷
সৌদি গোলরক্ষকের প্রশংসা করে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী আব্দালআজিজ বিন তুর্কি আল-ফয়সাল টুইটারে লিখেছেন, ‘‘হাজার হাজার অভিনন্দন, নায়কেরা৷’’
সৌদি আরবের কাছে না হারলে ইটালির রেকর্ড ছুঁতে পারতো আর্জেন্টিনা৷
ডেনমার্ক-টিউনিশিয়া ম্যাচ ড্র হয়েছে
এদিকে, মঙ্গলবারের দ্বিতীয় খেলায় ডেনমার্ক ও টিউনিশিয়া ০-০ গোলে ড্র করেছে৷ যদিও দুই দলই গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল৷ তবে দুই গোলরক্ষকের দক্ষতায় কেউ সফল হয়নি৷
এই খেলার মধ্য দিয়ে প্রায় দেড় বছর পর বড় কোনো প্রতিযোগিতায় ফিরলেন ডেনমার্কের এরিকসন৷ ইউরো ২০২০ এ খেলার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি৷ খেলার দ্বিতীয়ার্ধে দূর থেকে নেয়া তার একটি শট ঠেকিয়ে দেন টিউনিশিয়ার গোলরক্ষক আইমেন ডাখমেন৷
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করেছিলেন টিউনিশিয়ার ইসাম জেবালি৷ তবে তার শটটি একহাতে ঠেকিয়ে দেন ডেনিশ গোলরক্ষক কাস্পা স্মাইশেল৷
ডি গ্রুপের প্রথম খেলায় মুখোমুখি হওয়া ডেনমার্ক ও টিউনিশিয়ার ফিফা ব়্যাংকিং যথাক্রমে ১০ ও ৩০৷
টিউনিশিয়ার অনেক নাগরিক কাতারে কাজ করায় স্টেডিয়ামে তাদের উপস্থিতি বেশ ভালো ছিল৷
ডেনমার্কের পরের খেলা শনিবার ফ্রান্সের বিরুদ্ধে৷ একইদিন টিউনিশিয়া অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামবে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি)