দুর্যোগ পরবর্তী সংকটে শোকাবহ জার্মানি
১৯ জুলাই ২০২১কেবল রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট রাজ্যেই শতাধিক মানুষ মারা গেছেন৷ ৭৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন৷ বন্য়ার পানি নেমে যাওয়ার পর রাস্তা, ব্রিজের ক্ষয়ক্ষতি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷
আল্টেনআর শহরের মেয়র কর্নেলিয়া ভাইগান্ড আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সুপেয় পানির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে হতে পারে বাসিন্দাদের৷ জার্মানির বিল্ড পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘‘অবকাঠামো এত বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, কোনো কোনো এলাকায় কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাসও সুপেয় পানি না থাকতে পারে৷'' পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি জল সরবরাহ ব্যবস্থা টালু করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা এরই মধ্য়ে পরিদর্শন করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ পুনর্গঠন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট মোকাবিলায় তার সরকার কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে নির্বাচন৷ এবার আর ম্যার্কেল নির্বাচনে লড়ছেন না৷
আগামী নির্বাচনে গ্রিন পার্টির চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আনালেনা বায়েরবক৷ এআরডির মরগেনমাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরো হতে থাকবে৷ ‘‘আবহাওয়ার এমন প্রতিকূলতা আরো বাড়তে থাকবে৷’’ এই বন্যার ঘটনা জলবায়ু রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজনীয়তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বলেও মনে করেন তিনি৷ চ্যান্সেলর নির্বাচিত হলে বায়ুবিদ্যুৎ ও অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বায়েরবক৷
বাভারিয়া রাজ্যে ম্যার্কেলের দল সিডিইউ-এর সহযোগী দল সিএসইউ -র নেতা এবং বাভারিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার লড়াই তীব্র করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ এআরডিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই বন্যাকে ‘সতর্কবার্তা’ বলে উল্লেখ করেন৷
তার রাজ্যে জলবায়ু সংকট নিয়ে একটি নতুন আইন প্রণয়নের কাজ চলছিল৷ বন্যার পর সেটিকে বাস্তবায়ন করার কাজ আরো এগিয়ে আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ বন্যায় মূলত জার্মানির পশ্চিমের কয়েকটি রাজ্য বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দক্ষিণের বাভারিয়াও আক্রান্ত হয়েছে৷ অস্ট্রিয়া সীমান্তের বের্শটেসগাডেন থেকে বন্যার জল বাড়িতে ঢুকে পড়ায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হয়েছে৷
বন্যার ঘটনায় জার্মানির প্রাকৃতিক দুর্যোগ সতর্কতা ব্যবস্থার বেশ সমালোচনা হয়েছে৷ সঠিক সময়ে সঠিক সতর্কতা জারি করতে না পারায় এত হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে৷ কিন্তু এ অভিযোগ মানতে নারাজ ফেডারেল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর- বিকেকে৷
বিকেকে-র প্রধান আরমিন শুস্টার ডয়েচলান্ডফুংক রেডিওকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘সতর্কতা অবকাঠামো আমাদের মূল সমস্যা না৷ আমাদের সমস্যা হচ্ছে সতর্কতা দেয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ এবং জনগণ যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান৷’’ শুস্টার জানান, গত সপ্তাহের বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তার সংস্থা ১৫০টি সতর্কতা জারি করেছিল৷
গত মার্চের ছবিঘরটি দেখুন...