পুলিশি দুর্নীতি
২৮ মার্চ ২০১৪বাংলাদেশের ১০১ জন পুলিশ সদস্যের প্রায় দেড় কোটি টাকার ঘুস বাণিজ্যের খবর প্রকাশ হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে৷ তারা ২২৬ জনকে আটকের পর ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ঐ পরিমাণ টাকা নিয়েছেন৷ ১৯ জেলার একজন এসপিসহ এসআই পর্যন্ত কর্মকর্তারা এই ঘুস নেয়ার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ৷ এই বাণিজ্য হয়েছে দেশে রাজনৈতিক সংকটের সময়৷ আর যাদের আটকের পর ভয়ভীতি দেয়িয়ে টাকার বিনিময়ে ছাড়া হয়েছে, তাদের মধ্যে জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মী ছাড়াও আওয়ামী লীগের সমর্থক, ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, চোরাকারবারি, প্রেমিকযুগল, মোটরসাইকেল আরোহীরাও রয়েছেন৷ গত সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে এসব ঘটনা ঘটে৷
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৮ই মার্চ ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী' অভিযুক্ত এসব পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয়কে জানাতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দিয়েছে৷
টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তারা বার বার দেখেছেন পুলিশের এক শ্রেণির সদস্য দেশে রাজনৈতিক সংকটসহ যে কোনো ধরনের সংকটের সময় আটকের নামে ঘুস বাণিজ্য চালায়৷ তারা নিরীহ মানুষকে আটক করে মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে৷ আবার অর্থের বিনিময়ে প্রকৃত অপরাধীদেরও ছেড়ে দেয়৷ এতে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হন৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘এবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেই এরকম ১০১ পুলিশ কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ তাই আশা করা যায় এই সব পুলিশ কর্মকর্তা শাস্তির আাওতায় আসবেন৷ তবে আগেই পুলিশ সদর দপ্তরের নজরে বিষয়টি আসা উচিত ছিল৷ আর এখন পুলিশকে এ থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত৷''
ড. ইফতেখার বলেন, ‘‘পুলিশের এই ঘুস বাণিজ্য বন্ধ না হলে আইনের শাসন সুদূর পরাহত হবে৷ আর কতিপয় পুলিশ সদস্যের জন্য পুরো বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়৷''
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটি মামলায় দু'একজনের নাম দিয়ে শত শত অজ্ঞাত পরিচয় আসামি দেয়া হয়৷ এটা করাই হয় ঘুস বাণিজ্যের জন্য৷ নিরীহ মানুষকে আটকের পর ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের জন্য৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘এই কথা বলায় অনেকেই তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন৷ কিন্তু এখন প্রমাণিত হয়েছে পুলিশ কী ভাবে আটক করে ঘুস বাণিজ্য চলায়৷ তাদের নামও প্রকাশ হয়েছে৷ অসৎ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় এই বাণিজ্য থামছেনা৷''