‘উপাসনালয়ে হামলা হারাম'
১৭ জানুয়ারি ২০১৬প্রতি বছর দুই ঈদেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জামাত হয় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়৷ সেই শোলাকিয়া মসজিদের ইমাম এবার অন্য ধর্মাবলম্বীদরাও যাতে দেশে নির্বিঘ্নে ধর্ম পালন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে চলেছেন৷ এক্ষেত্রে ফতোয়া দিয়ে ভূমিকা রাখতে চান তিনি৷
এ লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছেন ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ৷ ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য বেশ কিছু ফতোয়া লিখে সেগুলোর সমর্থনে আলেমদের সাক্ষর সংগ্রহ করছেন তিনি৷ বাংলাদেশের পুলিশ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে যখন বিভিন্ন মসজিদ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত নজরদারী চালাচ্ছে, তখনই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন শোলাকিয়ার ইমাম৷
বিবিসি বাংলার খবরে জানা গেছে, ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ যেসব ফতোয়া আলেমদের কাছে সমর্থনের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন সেখানে ধর্মের উদারতার দিকগুলোই প্রতিভাত হয়েছে৷
সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘ইসলাম কখনো সন্ত্রাস সমর্থন করে না৷ বরং সন্ত্রাস হিংসা হানাহানি নির্মূল করার জন্যই ইসলামের আবির্ভাব৷''
আরেক ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ‘‘জিহাদ ও সন্ত্রাস এক জিনিস নয়৷ জিহাদ ইসলামের একটি অন্যতম নির্দেশ, পক্ষান্তরে সন্ত্রাস হারাম এবং অবৈধ৷''
‘‘সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি হারাম হওয়ায় এটা বেহেশত পাওয়ার পথ নয়৷ এটা দোযখের পথ৷ ইসলামে নিরপরাধ মানুষকে গণহারে হত্যা বৈধ নয়'' – এমন একটি ফতোয়ারও উল্লেখ করেছেন ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ৷
ধর্মের নামে হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ যে ইসলাম সমর্থন করে না তা জানাতে গিয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও দুর্বল – যারা যুদ্ধে শরিক নয়, তাদেরকে হত্যা করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ৷ যে কোনো অবস্থায় খুন করা অপরাধ৷ ইবাদত বা উপাসনারত কাউকে হত্যা করা সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ৷''
বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়ে হামলা নতুন কিছু নয়৷ ফরিদ উদ্দিন মাসউদ জানান ইসলাম এমন হামলারও বিরুদ্ধে , তাই ‘‘অমুসলিমদের গির্জা, প্যাগোডা, মন্দির ইত্যাদি উপাসনালয়ে হামলা করা হারাম ও অবৈধ৷''
বাংলাদেশে গত মাসেও মন্দির এবং অন্যান্য অমুসলিমদের উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে৷
তাই ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে৷ সমর্থনও জানায়েছেন অনেকে৷
তবে বাংলাদেশে আহমদিয়াদের মসজিদেও হামলা হয়৷ সম্প্রতি শিয়াদের মসজিদও হয়েছে হামলার শিকার৷
তাই টুইটারে একজন ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদের এই উদ্যোগকেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হিসেবেই উল্লেখ করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘শুধু অমুসলিম না, মুসলিমসহ যে কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালানো নিষিদ্ধ'' হওয়া উচিত৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
এই ফতোয়ায় ধর্মীয় সচেতনতা কি বাড়বে? উপাসনালয়ে হামলা কি বন্ধ হবে? জানান নীচের ঘরে৷