নাইজেরিয়ার উত্তরে ভয়াবহ বোমা হামলা, নিহত ২৫
২৭ জুন ২০১১মাইডুগুরিতে হামলা
রবিবার রাতে মাইডুগুরির একটি জনাকীর্ণ বিয়ার গার্ডেনে হামলা চালায় দুই মোটর সাইকেল আরোহী৷ তারা বিয়ার গার্ডেন লক্ষ্য করে কমপক্ষে তিনটি বোমা ছুঁড়ে মারে এবং গুলি চালায়৷ ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশ সদস্যরা ছিলেন হামলার লক্ষ্য৷ স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, হামলাকারীরা, মানে যাদেরকে মনে করা হচ্ছে বোকো হারাম-এর সদস্য, তারা জনাকীর্ণ সরাইখানাটি লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ে মারে এবং নির্বিচারে গুলি চালায়৷ এতে কমপক্ষে ২৫ ব্যক্তি নিহত এবং ৩০ জনের মতো গুরুতর আহত হয়েছে৷
এছাড়া এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, আমি তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি৷ এরপর বিক্ষিপ্ত গুলি শুরু হয়৷ এসময় মানুষ আর্তনাদ করতে করতে বিভিন্ন দিকে ছুটে পালিয়েছে৷
বোকো হারাম
নাইজেরিয়ার একটি জঙ্গি ইসলামপন্থী গোষ্ঠী বোকো হারাম৷ এই গোষ্ঠী নাইজেরিয়ার সরকারকে উৎখাত করে, সেদেশে ইসলামি শাসনব্যবস্থা চালু করতে চাচ্ছে৷ বোকো হারাম মনে করে, পশ্চিমা সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক কর্মকাণ্ড হারাম৷ যার অর্থ হচ্ছে নির্বাচন করা যাবেনা, শার্ট-প্যান্ট পরিধান করা যাবে না৷ এমনকি পার্থিব শিক্ষাব্যবস্থাতেও আপত্তি এই জঙ্গি গোষ্ঠীর৷ ২০০২ সালে মাইডুগুরিতে বোকো হারাম প্রতিষ্ঠা করে মোহাম্মদ ইউসূফ৷ সে একটি ধর্মীয় আবাসন তৈরি করে, যেখানে একটি মসজিদ এবং শিশুদের একটি বিদ্যালয় রয়েছে৷ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের গরিব মুসলমানরা তাদের শিশুদেরকে এই বিদ্যালয়ে পাঠায়৷ তবে বোকো হারাম শুধু শিক্ষার দিকেই মনোযোগী নয়৷ বরং অভিযোগ রয়েছে, জিহাদি নিয়োগে ব্যবহার করা হয় এই বিদ্যালয়টিকে৷
হামলার ধরন
আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার করেনি জঙ্গি গোষ্ঠীটি৷ তবে হামলার ধরন থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ধারণা এটি বোকো হারাম এর কাজ৷ তাছাড়া মোটর সাইকেলে করে এভাবে তারা আগেও হামলা চালিয়েছে৷ গত কয়েকমাসে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বেশ কয়েকটি হামলা চালায় এই জঙ্গি গোষ্ঠী৷ এগুলোর মধ্যে রয়েছে ডিসেম্বরে জোস শহরে বোমা হামলা, আবুজা শহরে সামরিক বাহিনীর আস্তানায় হামলা৷ এছাড়া গত মাসে সেদেশের প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন এর দায়িত্ব গ্রহণের সময়ও বেশ কিছু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বোকো হারাম৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই