মহিলা সংরক্ষণ বিল আসছে?
৮ মার্চ ২০১৬ভারতে কোনো রাজনৈতিক দলই ঐ বিল পাশ করাতে তেমন গা করেনি, অন্তত এখনও পর্যন্ত৷ কিন্তু কেন করেনি? প্রশ্ন সেটাই৷ ১৯৯৬ সালে কিন্তু নারীর জন্য জাতীয় ও রাজ্য আইনসভায় ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের উদ্দেশ্য সংবিধান সংশোধনীর বিল আনা হয়৷ তবে রাজনৈতিক দলগুলির ঐকমত্যের অভাবে তা ধামাচাপা পড়ে যায়৷
২০১০ সালে তা সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাশ হলেও, নিম্নকক্ষ লোকসভায় তা আটকে যায়, মূলত সরকার পক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায়৷ কিন্তু বর্তমান সংসদে মোদী সরকারের তো সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে৷ তাহলে এখন বিলটি পাশ করাতে বাধা কোথায়? তাহলে কি বুঝতে হবে যে, মহিলাদের ক্ষমতায়ন পুরুষপ্রধান রাজনৈতিক দলগুলি মন থেকে চায় না? দেখা গেছে, স্থানীয় এবং পঞ্চায়েত স্তরে নির্বাচিত মহিলারা পুরুষদের তুলনায় দক্ষতার বিচারে এগিয়ে আছে৷ তাই প্রথমেই যা করণীয়, তা হলো – রাজনৈতিক দলগুলির নিজেদের অবস্থানটা কী, সেটা স্পষ্ট করা৷ এ জন্য দলের ভেতরে মহিলাদের সরব হতে হবে৷ তার জন্য দায়বদ্ধ থাকতে হবে দলীয় নেতৃত্বকে৷ এখানে অবশ্য একটা প্রশ্ন করা যেতেই পারে৷ আর তা হলো, নিজে মহিলা হয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী কেন এতদিন নীরব ছিলেন?
অথচ মঙ্গলবার, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় সরব হয়ে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা মহিলা সংরক্ষণ বিলটি দ্রুত পাশ করাতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি৷ সংসদে রাখা তাঁর বক্তব্যে সোনিয়া গান্ধী মহিলাদের বৈধ ও প্রাপ্য অধিকার দিতে মোদী সরকারের কাছে দাবি জানান৷ এই ইস্যুতে তিনি মোদী সরকারের ‘সর্বাধিক সুশাসন, সর্বনিম্ন সরকার' স্লোগানের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘সরকার মুখে যেটা বলছে, কাজে সেটা করছে না৷ এই দ্বিচারিতা কাম্য নয়৷''
এই প্রসঙ্গে বিজেপি শাসিত কয়েকটি রাজ্যের উল্লেখ করেন সোনিয়া গান্ধী৷ যেমন হরিয়ানা অথবা রাজস্থান৷ সেখানে মহিলাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক করার ফলে মহিলারা, বিশেষ করে তপশিলি জাতি-উপজাতির মহিলারা নির্বাচনি প্রার্থী হতে পারছেন না৷ ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এটার সংশোধন দরকার৷ বক্তব্যে তিনি কন্যা সন্তানের সমঅধিকার, কন্যাভ্রুণ হত্যা নিবারণ, পণপ্রথার অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করার বিষয়গুলিও তুলে ধরেন৷
সরকারের তরফে সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাখভি অবশ্য আশা দিয়েছেন যে, বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে এবং চলতি অধিবেশনেই তা পাশ হবে৷ তবে কথায় বলে না, ‘না আঁচালে বিশ্বাস নেই'৷