আইন নিয়ে বিতর্ক
৬ অক্টোবর ২০১২ভারতের জাতীয় অপরাধ রেকর্ড কার্যালয়ের হিসেবে গত বছর বিবাহিত নারীর প্রায় দ্বিগুন সংখ্যক বিবাহিত পুরুষ আত্মহত্যা করেছেন৷ আর ৪৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা প্রায় তিনগুন৷
এর কারণ – নারীর ক্ষমতায়নে করা প্রায় ১৫টি আইনের অপব্যবহার৷ ফলে মেয়েরা সহজেই পুরুষদের বিরুদ্ধে যৌতুক চাওয়া, গৃহ নির্যাতন আর যৌন অপরাধের অভিযোগ আনছেন৷ পরিণতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কোনো জামিন ছাড়াই অভিযুক্তদের জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে৷ এতে করে সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়ে অনেকে আত্মহত্যা করছেন৷
‘মেনস রাইট অ্যাসোসিয়েশন'-এর প্রেসিডেন্ট অতিত রাজপারা বলছেন, প্রতিদিন তাঁরা গড়ে ১৫-২০ জন ক্ষুব্ধ স্বামী ও অবিবাহিত পুরুষের টেলিফোন পান৷ তিনি বলেন, অবস্থা এমন যে, বিশ্বের কেউ পুরুষদের দুঃখের কথা শুনতে চান না৷ তাঁরা শুধু নারীর সমস্যার কথাকে গুরুত্ব দেন৷ রাজপারা নিজেও ঐ ধরণের আইনের অপব্যবহারের ভুক্তভোগী৷ তাই তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে অসহায় মনে হয়৷ রাজপারা বলেন, তিনি নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে৷ তবে তাই বলে পুরুষের অসুবিধাগুলো দেখা হবে না, তা ঠিক নয়৷
‘নিখিল ভারত শাশুড়ি রক্ষা ফোরাম'-এর আহবায়ক নিনা ধুলিয়া জানান, তিনি নিজে ও তাঁর স্বামী-সন্তান এ ধরণের আইনের অপব্যবহারের শিকার হয়েছেন৷ তাদের পুত্রবধূ তাদের বিরুদ্ধে যৌতুক চাওয়া ও নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল৷
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেক সংগঠন এখন লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইন তৈরির দাবি তুলছে৷
তবে ‘সেন্টার ফর সোশ্যাল রিসার্চ'-এর পরিচালক রঞ্জনা কুমারী বলেন, যাঁরা পুরুষের অধিকারের কথা বলেন, তাঁরা নারীর উপর করা নির্যাতনের কথা ভুলে গেছেন৷ তাঁরা ভুলে গেছেন যে, প্রতিবছর প্রায় আট হাজার নারী যৌতুকের কারণে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছেন৷
তবে আইনের যে ভুল ব্যবহার হচ্ছে তাও স্বীকার করেন রঞ্জনা কুমারী৷ তাই যাঁরা মিথ্যা মামলার শিকার তাঁদের প্রতি যৌতুক দেয়া বা নেয়ার বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷
প্রতিবেদন: তনুশ্রী শর্মা সান্ধু/জেডএইচ
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ