নারীর প্রতি মনোভাব বদলাতে মিশরে ‘গার্লস ওনলি’ বেতার
২৯ জুন ২০১১মাথা কীভাবে কাপড় দিয়ে ঢাকতে হবে - এ জাতীয় ইস্যুই হচ্ছে মিশরের নারীদের জন্য প্রচারিত বেতার অনুষ্ঠানের বিষয়৷ সেখানে নারী কী চায়, ভবিষ্যৎ নিয়ে নারীরা কী ভাবছে এসব বিষয়ে কখনো অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়না৷
এ ধরণের একঘেয়ে ও একপেশে অনুষ্ঠান শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে ওঠেন ২৭ বছরের টুনসি৷ তাই একসময় নিজেই চিন্তা করেন বেতার চালু করার৷ কিন্তু ২০০৮ পর্যন্ত বেতারের লাইসেন্স পাওয়া যেতনা৷ পরে আইন সংশোধন হলে ঐ বছরই বেতার চালু করেন টুনসি৷ কিন্তু শুরুতে কারও কাছ থেকে অর্থ সাহায্য পাওয়া যাচ্ছিল না৷ পরে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কাজ শুরু করেন৷ পেপসি, কোকাকোলার মতো কোম্পানি স্পন্সর হিসেবে এগিয়ে আসে৷ কিন্তু আর্থিক মন্দা দেখা দেয়ায় কদিন পর তারা চলে যায়৷ পরে বেতার চালানোর অর্থ যোগাতে একটি প্রকাশনা সংস্থা খোলেন টুনসি৷
তাঁর এই বেতার একসময় তুমুল জনপ্রিয়তা পায়৷ বর্তমানে শ্রোতার সংখ্যা প্রায় ৬০ লক্ষ বলে জানা গেছে৷ প্রতিদিন চার ঘন্টা অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়৷
টুনসি বলেন, মিশরে একটা মেয়ে যতই সফল হোক না কেন সে যদি বিয়ে না করে তাহলে তার জীবন পূর্ণ হলোনা - এমনই মনে করে পুরুষরা৷
সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের শাসনামলে টুনসির বেতার ভাঙচুর করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল৷ কারণ তিনি তাঁর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করছিলেন৷ টুনসি নিজেও তাহরির চত্বরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন৷
টুনসির এই উদ্যোগের কারণে জার্মানির গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি বিএমডব্লিউ তাঁকে ‘ইয়ং লিডারস অ্যাওয়ার্ড' দিয়েছে৷ গতমাসেই এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে তাঁর হাতে৷ যার পরিমাণ প্রায় দশ লক্ষ টাকা৷
পুরস্কার পেয়ে স্বভাবতই খুশি টুনসি৷ তিনি বলছেন, এটা পাওয়ায় তাঁর উৎসাহ আরও বেড়ে গেল৷ এখন থেকে তিনি মুবারক পরবর্তী মিশরকে কীভাবে গড়ে তোলা যেতে পারে, তার নানা দিক নিয়ে অনুষ্ঠান করবেন৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক