নাৎসি অপরাধীদের বিচার অব্যাহত রাখার দাবি জানালেন শিমন পেরেস
২৭ জানুয়ারি ২০১০তাঁদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস জার্মানিকে নাৎসি অপরাধীদের মধ্যে এখনও যারা জীবিত, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান জানালেন৷
বুন্ডেস্টাগে দেয়া এক আবেগমথিত ভাষণে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস হলোকস্টকে ‘এক চিরায়ত সংকেত', ‘জীবনের পবিত্রতা রক্ষার দায়বদ্ধতা' বলে অভিহিত করেন৷ ৮৬ বছর বয়স্ক নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী এই শীর্ষ ইসরায়েলি নেতা বলেন, ‘‘হলোকস্টকে সর্বদাই মানবিক নীতিচেতনার এক দায়বদ্ধতা হিসেবে চোখের সামনে রাখতে হবে৷ এ দায়বদ্ধতা জীবনের পবিত্রতা রক্ষার দায়বদ্ধতা৷''
১৯৪৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি নাৎসিদের কুখ্যাত আউশভিৎস বন্দি শিবির মুক্ত করে তৎকালীন সোভিয়েত সেনারা৷ শুধু ঐ শিবিরেই নিহত হন দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ৷ প্রেসিডেন্ট পেরেস তাঁর ভাষণে এখনও জীবিত থাকা নাৎসি অপরাধীদের যথাযথ বিচার করার আবেদন জানালেন৷ বললেন, এটা প্রতিহিংসা নয়, বরং শিক্ষার ব্যাপার৷ তিনি বলেন, যুব সমাজকে ঐ ঘটনার কথা স্মরণ করতে হবে৷ ভুলে গেলে চলবে না৷ তাদের জানতে হবে কী ঘটেছিল সে সময়৷
উল্লেখ্য, জার্মানির মিউনিখ শহরে সন্দেহভাজন নাৎসি অপরাধী জন দেমইয়ানুকের বিচার চলছে৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আজকের পোল্যান্ডে সবিবর নাৎসি নিধন শিবিরে রক্ষী হিসেবে দেমইয়ানুক প্রায় ২৮ হাজার মানুষের হত্যাকান্ডে সাহায্য করেছিল৷
পেরেস আজকের ইসরায়েল রাষ্ট্রের ওপর থাকা হুমকির কথাও উল্লেখ করেন৷ বলেন, বিপদের সামনে ইহুদি রাষ্ট্রকে যাতে আর কখনও একা দাঁড়াতে না হয় তার জন্য জার্মানি তার সাধ্যমত সব কিছু করবে এ ব্যাপারে তিনি স্থির নিশ্চিত৷
জার্মান সংসদের স্পিকার নর্বার্ট লাম্যার্ট বলেন, ইসরায়েলের ব্যাপারে জার্মানির একটা দায়বদ্ধতা আছে৷তিনি বলেন, অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হতে পারে৷ কিন্তু ইসরায়েলের টিকে থাকার অধিকার আলোচনাসাপেক্ষ নয়৷
হলোকস্টে বেঁচে যাওয়া পোলিশ ইতিহাসবিদ ফেলিক্স টিখ সংসদের বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন৷ উপস্থিত ছিলেন জার্মান প্রেসিডেন্ট হর্স্ট ক্যোয়েলার, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিবৃন্দ৷
২০০৫ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক হলোকস্ট স্মরণ দিবস বলে ঘোষণা করে৷ ১৯৯৬ সাল থেকেই জার্মানিতে এই দিনটি নাৎসিবাদের শিকার হওয়া মানুষদের প্রতি নিবেদিত স্মরণ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে৷
প্রতিবেদক: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক, সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার