নাৎসি নিধন শিবিরের অপরাধে প্রাক্তন রক্ষী দণ্ডিত
১২ মে ২০১১দীর্ঘ দেড় বছর ধরে চলেছিল দেমইয়ানুক মামলা৷ ১৯৪৩ সালে সবিবর নিধন শিবিরে অন্তত ২৮ হাজার ৬০ জনকে হত্যার সহায়ক হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করেছে জার্মান আদালত জন দেমইয়ানুক'কে৷ নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন ইহুদি৷ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের রায় যখন পড়া হচ্ছিল দণ্ডিত ব্যক্তি কোন রকমের আবেগ অনুভূতি দেখায়নি৷ দেমইয়ানুক তার বিচারকাজ বিছানায় শুয়েই এতদিন অনুসরণ করেছে৷ তার চোখে ছিল ঘন কালো চশমা৷
আদালত তার রায়ে বলেছে, কোন সুনির্দিষ্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দেমইয়ানুক'কে যুক্ত করা না গেলেও শিবিরের একজন রক্ষী হিসেবে তার উপস্থিতিই দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট৷ কেননা নিধনকাজই ছিল সবিবর বন্দি শিবিরের উদ্দেশ্য৷ মিউনিখের আদালতে এই রায় শুনতে উপস্থিত ছিলেন ইহুদি নিধনযজ্ঞ হলোকস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া অন্তত জনা বারো মানুষ এবং নিহতদের কারো কারো আত্মীয় পরিজন৷ দেমইয়ানুকের আইনজীবীরা বলেছেন, তাঁরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন৷
জেরুসালেমে নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনতে নিবেদিত সিমন ভিজেনথাল সেন্টারের এফরাহিম জুরফ দণ্ডাদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এ ধরনের আরো বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, এই রায় অত্যন্ত শক্তিশালী এক বার্তা পাঠালো যে, হলোকস্টের অপরাধের বহু বছর পরেও কৃত অপরাধের জন্য হত্যাকারীদের এখনও বিচার হতে পারে৷
দেমইয়ানুকের জন্ম ইউক্রেনে৷ যুদ্ধের পর সে স্থায়ীভাবে পাড়ি দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে৷ ইসরায়েলেও তার বিচার হয়েছিল৷ সেখানে তার ফাঁসির দণ্ড হয়েছিল৷ কিন্তু আপিলে ছাড়া পেয়ে যায়৷ সেখান থেকে ফিরে যায় সে আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে৷ ২০০৯ সালের মে মাসে বহিষ্কৃত হয় সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে৷ বিচারের জন্য তাকে নিয়ে আসা হয় জার্মানিতে৷ বিচারের গোটা সময়েই দেমইয়ানুক অবশ্য দাবি করে এসেছে যে সে নির্দোষ৷
এই বিচারে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভাব বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ তাছাড়া অভিযুক্তের স্বাস্থ্যও ছিল অত্যন্ত দুর্বল৷ বিচার শুরু হয় ২০০৯ এর ৩০ নভেম্বর৷ এবং আদালত নির্ভর করেছে বহুলাংশে জার্মানিতে রক্ষিত রেকর্ড-এর ওপর৷ ঐ রেকর্ডে দেমইয়ানুকের নাম পাওয়া গেছে৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ