1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

'নির্লজ্জ মিথ্যা' বলছে অ্যামেরিকা, দাবি চীনের

২৯ এপ্রিল ২০২০

ডনাল্ড ট্রাম্পের লাগাতার আক্রমণের জবাব দিল চীন। বেইজিং জানিয়েছে নিজেদের ত্রুটি ঢাকতে মিথ্যা বলছে অ্যামেরিকা।

https://p.dw.com/p/3bXaH
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Bohan

এ বার অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে মুখ খুললো চীন। বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প লাগাতার চীনের দিকে আঙুল তুলছিলেন। এ বার তার জবাবে বেইজিং জানালো, অ্যামেরিকার রাজনীতিবিদরা 'নির্লজ্জ মিথ্যা' বলছেন। চীনের দাবি, অ্যামেরিকা নিজের ত্রুটি ঢাকতেই মানুষের চোখ অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে। এ দিকে এই বিতর্কের মধ্যেই মার্কিন মুলুকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেল।

গত প্রায় এক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিন ডনাল্ড ট্রাম্প চীন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, চীনের গাফিলতিতেই করোনা সংক্রমণ বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, এর আগে ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, উহানের ভাইরোলজির ল্যাবরেটরি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ানো হয়েছে। এর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। সোমবারেও চীনের বিরুদ্ধে তদন্তের হুমকি দিয়েছেন তিনি। এ বার তারই জবাব দিল চীন। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সরাসরি আক্রমণ না করলেও বেইজিং জানিয়েছে, অ্যামেরিকার রাজনীতিবিদরা নির্লজ্জ ভাবে অসত্য প্রচার করছেন। শুধু তাই নয়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্রের দাবি, অ্যামেরিকা মহামারি মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতা ঢাকতেই তারা চীনের দিকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে।

এ দিকে উহানের যে পরীক্ষাগার বা ল্যাবরেটরির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তার প্রধানও মুখ খুলেছেন এত দিন পরে। রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যাঁরা এ সব কথা বলছেন, তাঁদের কাছে কোনও তথ্য সূত্র নেই। সম্পূর্ণ মনগড়া অভিযোগ করা হচ্ছে।

চীন-অ্যামেরিকা বিতর্ক চলছে, চলবে। আর তারই মধ্যে ট্রাম্পের দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদিও নিউ ইয়র্ক জানিয়েছে, মঙ্গলবার গত এক মাসের মধ্যে সব চেয়ে কম রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এটি সামান্য হলেও স্বস্তির কথা। মার্কিন মুলুকে বুধবার সকাল পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৯ হাজার লোকের। তার পরেই রয়েছে ইটালি। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৩৫৯ জনের। স্পেনে মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার। তবে ইউরোপের পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে অনেকই ভালো। জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেওয়া হচ্ছে। ১১ মে-র পর থেকে ফ্রান্সেও লকডাউন তোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে সংক্রমণের ভয় এখনই কাটছে না। ইউরোপ সহ গোটা বিশ্বেই ফের করোনার আক্রমণ শুরু হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন। চীনে প্রতিদিনই নতুন করে আক্রান্ত পাওয়া যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে লকডাউন তুললেও জীবনযাপন একেবারে স্বাভাবিক হয়ে যাবে, এমন আশ্বাস কোনও দেশই দিতে পারছে না। জার্মানি লকডাউন তোলার প্রক্রিয়া শুরু করলেও প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরতে নিষেধ করছে।

এ দিকে এশিয়ার পরিস্থিতিও ভালো নয়। পাকিস্তান জানিয়েছে, মঙ্গলবার ছিল সব চেয়ে ভয়াবহ দিন। প্রতিদিনই সেখানে করোনা রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ভারত এবং বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ছে। কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ বলছেন, ২১ মে-র পরে এই অঞ্চলে করোনার প্রকোপ কমবে। তবে সেই বক্তব্যের আদৌ কোনও যুক্তি আছে কি না, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে।

এরই মধ্যে অ্যামেরিকা জানিয়েছে, বিদেশ থেকে যে সমস্ত বিমান অ্যামেরিকায় ঢুকবে তার বহু যাত্রীরই করোনা পরীক্ষা হবে। কোন কোন দেশের যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বলবৎ হবে, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।

করোনার প্রকোপে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও ক্রমশ উদ্বেগজনক হচ্ছে। স্পেনে করোনা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও অর্থনীতি ধসে পড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, অন্তত ১৪ শতাংশ মানুষ সেখানে কাজ হারিয়েছেন। শুধু স্পেন নয়, গোটা বিশ্বেই করোনার প্রকোপে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। বেতন কমে গিয়েছে অনেকের। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগামী কিছু দিনের মধ্যে এই পরিস্থিতি বদল হওয়ার কার্যত কোনও সম্ভাবনা নেই।

তারই মধ্যে নতুন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। সে দেশের চিকিৎসকদের বক্তব্য, শুধু বয়স্ক নয়, করোনার জেরে সে দেশে বহু শিশুরও মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু করেছেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার সকাল পর্যন্ত গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ লাখ ৩৮ হাজার। মৃত্যু হয়েছে মৃত্যু হয়েছে প্রায় দুই লাখ ১৮ হাজার লোকের। সুস্থ হয়েছেন নয় লাখ ৫৫ হাজার জন।

এসজি/জিএইচ (রয়চার্স, এপি, এএফপি)