নয়ন বন্ড খুনের তদন্ত হবে কি?
১৭ জুলাই ২০১৯মঙ্গলবার সকাল ১০টার একটু আগে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি মাইঠা গ্রাম থেকে পুলিশ লাইনে আনার কথা জানিয়েছিলেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন৷ মামলার প্রধান সাক্ষী হিসেবে মিন্নির জবানবন্দি নেওয়া হয় তখন৷
রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রিফাত হত্যায় মিন্নির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
ভালো কথা৷
প্রশ্ন হচ্ছে, অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশ কাস্টডিতে থাকা অবস্থায় কী করে মারা গেলো তার তদন্ত কি হবে?
আমরা বারবার বলছি, বিচার কাজে কোনো গাফিলতি থাকলে দীর্ঘসূত্রতা থাকলে তা দূর করার চেষ্টা করুন, সেই সমস্যার সমাধান করুন৷ অস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে কাউকে মেরে ফেলা এর বিকল্প হতে পারে না৷
ধারাবাহিকভাবে যদি বলি, দিনের আলোতে রিফাতের হত্যা, তার স্ত্রীর করুণ আর্তি সামাজিক গণমাধ্যমের চাপ আর নয়ন বন্ডকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যাওয়া আবার সামাজিক গণমাধ্যমে নানারকম দাবির প্রেক্ষাপটে মিন্নির গ্রেপ্তার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কী ভয়ংকর দেশে আমরা বাস করি আর আমরা নিজেরাও কতটা ভয়ংকর? মনে পড়ে নয়ন বন্ড মারা যাওয়ার পরে মিষ্টি বিতরণ ও খাওয়ার দৃশ্য৷
মিন্নি অপরাধী কিনা, তা আমরা এখনো জানি না৷ পুলিশ বলছে, তারা তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে৷ কিন্তু দুটো বিষয় আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি, এক নয়ন দিনের আলোতে কুপিয়ে রিফাতকে খুন করেছে আর দুই তার মৃত্যু হয়েছে পুলিশ হেফাজতে৷ দুটো ঘটনাই অপরাধ৷ আমরা এই দুই অপরাধের বিচার দাবি করি৷ আমাদের দুর্ভাগ্য এই, প্রথম অপরাধীকে আর বিচারের সম্মুখীন করা সম্ভব নয়৷ কিন্তু দ্বিতীয় অপরাধের বিচার না হলে আমাদের কপালে আরও অনেক বেশি দুর্ভোগ রয়েছে৷
গত ২৬শে জুন বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাতকে তার স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করে কয়েকজন৷ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাতের মৃত্যু হয়৷
ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে বিশেষ করে সামাজিক গণমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি হয়৷ আক্রমণকারীদের একজন, নয়ন বন্ডকে পুলিশ আটক করে৷
পরে পুলিশের ভাষায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তার মৃত্যু হয়৷