অপরাধীদের ধরতেই হবে
১৫ মার্চ ২০১৬যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে গত ৫ ফেব্রুয়ারি৷ হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফ্ট কোড হ্যাক করে ‘আডভাইজ' পাঠিয়ে ফিলিপাইন্সের একটি ব্যাংকে ঐ টাকা স্থানান্তর করে৷ তাই ফিলিপাইন্সেও এই ঘটনার তদন্ত হচ্ছে৷ ব্যাংক ম্যানেজারসহ সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত৷
তবে এই ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংক, তথা ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান গোপন রেখেছিলেন৷ তিনি অর্থমন্ত্রী বা সরকারের নীতিনির্ধারক কাউকে প্রথমে এ বিষয়ে কিছুই জানাননি৷ চলতি মাসের ৮ তারিখে এই সাইবার ডাকাতির খবর ফিলিপাইন্সের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়৷ এরপর বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমও তা প্রকাশ করে৷ খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়৷ বিশেষ করে একমাস ধরে ঘটনা গোপন রাখায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাংলাদেশ ব্যাংক ও গভর্নরের সমালোচনায় ফেটে পড়েন৷ ক্ষুব্ধ হন প্রধানমন্ত্রীও৷
অবশেষে এই দায় নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগ-পত্র জমা দেন ড. আতিউর রহমান৷ এরইমধ্যে সরকার সাবেক অর্থ সচিব ফজলে কবিরকে নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে৷ তিনি অবশ্য এখন দেশের বাইরে আছেন৷ দেশে ফিরে ১৯ মার্চ তিনি কাজে যোগ দেবেন৷ রিজার্ভ কেলেঙ্কারির ঘটনায় মঙ্গলবার দু'জন ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম এবং নাজনিন সুলতানাকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলেো জানা গেছে৷ তবে মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে আসামি করা হয়নি৷
এদিকে পদত্যাগের পর ড. আতিউর বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির সঙ্গে এখানকার কেউ জড়িত থাকলে তিনি তাদের ধরতে সহায়তা করবেন৷'' এক মাস বিষয়টি গোপন করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধার করার স্বার্থেই তিনি বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন৷'' গোপন রাখার কারণেই কিছু অর্থ উদ্ধার হয়েছে বলে তাঁর দাবি৷ তিনি আরো দাবি করেন, ‘‘বাংলাদেশ ব্যাংক আমার সন্তানের মতো৷ আমি এর কোনো ক্ষতি করিনি৷''
এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ড. আতিউর নৈতিক দায় থেকে পদত্যাগ করেছেন৷ এটা ভালো দিক৷ কিন্তু পদত্যাগ তো আর সমাধান নয়৷ তাই এখন আমাদের দেখতে হবে এই ঘটনায় কারা জড়িত এবং তাদের উদ্দেশ্য কী?''
তিনি আরো বলেন, ‘‘এ ঘটনার সঙ্গে বিদেশিরা যে জড়িত, তা আমরা এরই মধ্যে জানতে পেরেছি৷ তকে এখানকার বা বাংলাদেশ ব্যাংকের কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা বের করা প্রয়োজন৷ তাছাড়া এই হ্যাকিং-এর উদ্দেশ্য কি শুধুই চুরি না অন্তর্ঘাতমূলক কোনো কাজ – সে ব্যাপারেও স্পষ্ট ধারণা পেতে হবে৷ কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকে এর আগেও অন্তর্ঘাতের প্রমাণ আছে৷''
আপনার কী মনে হয় বন্ধু? এই টাকা চুরির পেছনে কে বা কারা আছে? জানান নীচের ঘরে৷