ভারত
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১২দক্ষিণী রাজ্য তামিলনাড়ুর কুড়ানকুলাম পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়৷ প্রতিবাদকারীরা বৃহস্পতিবার পরমাণু কেন্দ্রের কাছে সমুদ্রে বুক জলে নেমে মানব শৃঙ্খল তৈরি করে৷ এদের মধ্যে বেশিরভাগ মহিলা ও শিশু৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া পুলিশ পাহারা রাখা হয়৷ কুড়ানকুলাম শহর কার্যত সিল করে দেয়া হয়৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হয় নেতাদের গ্রেপ্তার করতে৷
এই আন্দোলন যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে সরকারের সন্দেহ, এর পেছনে বিদেশি এনজিওগুলির হাত আছে৷ প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী নারায়নস্বামী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ঐ এলাকায় ৬টি এনজিও সক্রিয়৷ তারা বিদেশ থেকে টাকা পায়৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করে দেয়৷ একজন জার্মান নাগরিককে ঐ এলাকায় অকারণে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়৷ তাঁকে ফেরৎ পাঠানো হয়৷ কাজেই বিদেশি এজেন্সিগুলির কায়েমি স্বার্থ জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে৷ তাঁরা পরমাণু কেন্দ্র চাইছেনা বলে বিক্ষোভে মদত দিচ্ছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী৷
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশে নর্মদা নদীর ওপর ওঙ্কারেশ্বর ও ইন্দিরা সাগর বাঁধের জলের মাত্রা কম করার দাবিতে জল সত্যাগ্রহ করে প্রতিবাদকারীরা সরকারকে তাঁদের দাবি মানতে বাধ্য করে৷ এটাকেই এবার হাতিয়ার করেছে কুড়ানকুলাম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনকারীরা৷ গত এক বছর ধরে চলা এই গণ আন্দোলন এক নতুন মাত্রা পেল৷
আন্দোলনকারীদের দাবি চারটি৷ পরমাণু চুল্লিতে ইউরেনিয়াম জ্বালানি ভরার কাজ বন্ধ রাখা, আন্দোলনের নেতাদের গ্রেপ্তার না করা, যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেয়া এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া৷
এদিকে কুড়ানকুলাম পরমাণু কেন্দ্রে জ্বালানি ভরার কাজ স্থগিত রাখার আর্জি বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যায়৷ আন্দোলনকারীদের আইনজীবী প্রশান্তভূষণ যথেষ্ট সুরক্ষাকবচ নেই – এই যুক্তিতে জ্বালানি ভরা বন্ধ রাখার এই আর্জি জানান৷ আদালত সরকারকে বলেছেন, পরমাণু নিয়ন্ত্রক পর্ষদের সুপারিশ করা ১৭টি রক্ষাকবচ এখনো কার্যকর হয়নি৷
সরকারের তরফে বলা হয়, এইসব সুরক্ষাকবচ মৌলিক নয়, অতিরিক্ত৷ মূল সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত৷ বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই৷ রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত কুড়ানকুলাম পরমাণু কেন্দ্রের দুটি ইউনিটে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন