1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমবঙ্গে কেন বিজেপি-র সভাপতি বদল?

২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

সোমবার রাতে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি করা হয়েছে।

https://p.dw.com/p/40aip
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি পদ থকে সরিয়ে দেয়া হলো দিলীপ ঘোষকে।ছবি: Imago Images/Pacific Press Agency/S. Paul

দিলীপ ঘোষের সভাপতি থাকার মেয়াদ ছিল ২০২৩ পর্যন্ত। কিন্তু তার সভাপতি পদে থাকার মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর চার মাস তাকে আগেই সরিয়ে দেয়া হলো। তার জায়গায় সভাপতি করা হয়েছে উত্তরবঙ্গের বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে।

দিলীপ ঘোষের মতো সুকান্তও আরএসএসের কাছের ও পছন্দের নেতা। তবে তিনি দিলীপের মতো অতটা সোচ্চার নেতা নন। দিলীপ সভাপতি থাকার সময় প্রচুর বিতর্কিত কথা বলেছেন। গোরুর দুধে সোনা থাকা থেকে শুরু করে হোমগার্ডকে চড় মারা সমর্থন করা পর্যন্ত তার নানা কথা নিয়ে ভরপুর বিতর্ক হয়েছে। তুলনায় সুকান্ত এতদিন পর্যন্ত খুব বেশি বিতর্কিত মন্তব্য করেননি।

দিলীপ ঘোষকে অবশ্য বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সংগঠনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বিজেপি-তে এই পদের গুরুত্ব বা কাজ অত বেশি নয়। সংগঠনে সভাপতির পর সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্ব বেশি। সহ সভাপতির পদ কার্যত গুরুত্বহীন বলেই মনে করেন বিজেপি নেতারা।  

কেন এই বদল?

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সভাপতি বদল কেন করলেন মোদী-শাহ-নাড্ডা? কেন্দ্রীয় বিজেপি-র সূত্র জানাচ্ছে, এর কারণ প্রধাণত দুইটি। প্রথমত, বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফল এবং পরে একের পর এক সাংসদের দল ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার দায় মূলত দিলীপ ঘোষের ঘাড়েই চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া শুভেন্দু অধিকারী সহ একাধিক নেতার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না।  

তবে তার থেকেও বড় কারণ হলো, উত্তরবঙ্গের এক নেতার হাতে রাজ্য বিজেপি-র ভার দিতে চেয়েছেন তারা। মোদী-শাহের কাছে বিধানসভা নির্বাচন অতীত। এখন প্রধান বিষয় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে যত বেশি সম্ভব আসনে জেতা। গতবার ১৮টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। বেশিটাই উত্তরবঙ্গ থেকে।  তৃণমূল ও বামেদের ক্ষেত্রে সবসময়ই দলের দায়িত্বে থেকেছেন দক্ষিণবঙ্গের নেতা। বিজেপি অন্য পথে হেঁটে উত্তরবঙ্গের মানুষের মন পেতে চেয়েছে।

মারের বদলা মার, এই নীতিতেই চলছেন দিলীপ

গত বিধানসভা নির্বাচনে দেখা গেছে, উত্তরবঙ্গে হারানো জমি কিছুটা ফেরত পেয়েছেন মমতা। আর আগামী লোকসভা নির্বাচন তিনি লড়তে চান প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে বা মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের নেতা হিসাবে। তিনি এখন থেকে সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  ফলে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিংহভাগ আসনে জেতার জন্য তিনি আবেগকে হাতিয়ার করতে পারেন। বাংলা থেকে কখনো কেউ দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। সেই আবেগ নিয়ে ভোটে গেলে আসনসংখ্যা বাড়িয়ে নিতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। তাই উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্রকে দলের দায়িত্ব দিলেন মোদী-শাহ।

প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''বিজেপি-র উত্তরবঙ্গের নেতাদের মধ্যে এবার সুকান্তই নিজের কেন্দ্রে শক্তি অক্ষুন্ন রাখতে পেরেছেন। বালুরঘাটের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি জিতেছে। উত্তরবঙ্গের অন্য সাংসদদের কেন্দ্রে বিজেপি যথেষ্ট খারাপ ফল করেছে। সেটাও সুকান্তকে রাজ্য সভাপতি করার পিছনে কাজ করেছে।'' আশিসের মতে, ''সুকান্তর কথাবার্তায় অনেক সংযত ও পরিশীলিত। তাই তিনি মধ্যবিত্তের কাছে অনেক বেশি গ্রহণয়োগ্য হবেন বলে শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন।''  

জিএইচ/এসজি(বিজেপি-র বিজ্ঞপ্তি)