পারমাণবিক পরিকল্পনা বাতিল করে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হল জার্মানির
৩০ মে ২০১১জার্মান সরকারকে দেখা গেল তাদের আগের সিদ্ধান্ত থেকে প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যেতে
কারণ সহজ৷ একে তো ফুকুশিমার ভয়াবহ কাণ্ড৷ বিশ্বে সবচেয়ে প্রযুক্তি পরায়ণ দেশ জাপানেই সুনামি আর ভূকম্পনের যুগপৎ হামলার পর যেভাবে পারমাণবিক ভীতি ছড়িয়ে পড়েছিল, তার টাটকা উদাহরণ জার্মান সরকারকে যথেষ্ট ভাবিয়েছে৷ তারপর দেখা যাচ্ছিল জার্মানির মধ্যে এই পারমাণবিক পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র আপত্তি৷ গত কয়েকমাস যাবৎ এদেশের সব বড় শহরেই একাধিক বিক্ষোভের ছবি দেখা গেছে৷ যাতে সাধারণ মানুষের যোগদানটা ছিল চোখে পড়ার মতই৷ ফলে তারপরে সরকারকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বিশেষ ভাবতে হয়নি৷
এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের সামনে জার্মানির ভাবমূর্তি উঁচু করবে
পারমাণবিক শক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত জার্মানির ভাবমূর্তি ভালো করবে এমন মতামত দিলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে৷ পাঁচ দেশীয় সফরে বেরিয়ে বর্তমানে তিনি রয়েছেন ভারতে৷ ভেস্টারভেলের মতে, জার্মানি যে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, সেটাই ভবিষ্যতের পথ৷ ফলে, সেকাজে গোটা দুনিয়ায় এবার নেতৃত্ব দিতে পারবে জার্মানি৷
দেশের অভ্যন্তরে জ্বালানির যোগাড় নিয়ে সমস্যা হবে না কী?
সে সমস্যার সমাধান খুঁজতে চায় ম্যার্কেল সরকার সবুজ উপায়ে৷ যার অর্থ, পরিবেশ বান্ধব পন্থা৷ বস্তুত জার্মানির যাবতীয় জ্বালানির মধ্যে ২৩ শতাংশ আসে ওই পারমাণবিক বিদ্যুৎ থেকে৷ তার সমাধানের জন্য, এর মধ্যের সময়টাকে ব্যবহার করে সৌরবিদ্যুৎ এর জন্য রাস্তা প্রশস্ত করতে চায় জার্মানি৷ জার্মান পরিবেশমন্ত্রী নরবার্ট ব়্যটগেন সেরকম ইঙ্গিত দিয়েছেন বৈঠকের পর৷ কিন্তু, একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে এই সিদ্ধান্ত থেকে যে জার্মানি পথ দেখাতে পারে৷ তাদের সে সক্ষমতা আছে৷ আর যে বিষয়টি রাজনৈতিক দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা হল, এই সিদ্ধান্তের ফলে আসলে পায়ের তলায় জমি আরও শক্ত হল জার্মানির সবুজ দল বা গ্রিন দলের৷ ম্যার্কেলের আগে এসপিডি সবুজ দলের জোট সরকারের সময়েই এই পারমাণবিক পরিকল্পনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত প্রথম নেওয়া হয়েছিল৷ এতদিনে তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ