পার্টিগেট নিয়ে দলে বিদ্রোহের মুখে বরিস জনসন
২০ জানুয়ারি ২০২২বিপাকে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। করোনাকালে নিয়ম ভেঙে পার্টি করার অভিযোগ(পার্টিগেট) উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আর তানিয়ে নিজের দলের ভিতরেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে জিতে আসার পর এটাই জনসনের সামনে দলের অন্দরে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চ হিসাবে দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই দলের এক পার্লামেন্ট সদস্য তার বিরোধিতা করে বিরোধীদের সমর্থন করছেন। কনসারভেটিভ পার্টির অন্তত ৫৪ জন আইনসভা সদস্য দলীয় কমিটির কাছে জনসনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।
'পর্ক পাই প্লট'
এই দলীয় বিদ্রোহকে বলা হচ্ছে 'পর্ক প্লাই প্লট'। কারণ, কনসারভেটিভ পার্টির যে পার্লামেন্ট সদস্য প্রথম বিদ্রোহ করেছেন, তিনি রুটল্যান্ড-মেল্টনের প্রতিনিধি। আর এই জায়গাকে বলা হয় মেল্টন পর্ক পাইয়ের কেন্দ্র। অবশ্য লন্ডনে 'পর্ক পাই' কথাটিকে স্ল্যাং হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।
জনসনের মাথাব্যথা কেবলমাত্র একজন পার্লামেন্ট সদস্যকে নিয়ে নয়, পার্লামেন্টে দলের ৩৬০ জন সদস্যের মধ্যে ৫৪ জন ইতিমধ্যেই জনসনকে নেতৃত্ব থেকে সরাবার দাবি নিয়ে দলীয় কমিটিকে চিঠি দিয়েছেন বা দিচ্ছেন। রক্ষণশীলদের পক্ষে ঝুঁকে থাকা সংবাদপত্র ডেইলি টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ২০ জন চিঠি পাঠাবার পরিকল্পনা করেছেন, বাকিরা চিঠি পিঠিয়ে দিয়েছেন।
টাইমস জানিয়েছে, অন্ততপক্ষে ৫৮ জন পার্লামেন্ট সদস্য প্রকাশ্যে জনসনের সমালোচনা করেছেন।
ডিডাব্লিউর প্রতিনিধি শার্লট চেলসম-পিল জানাচ্ছেন, এটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না, জনসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে কিনা, তবে বিরোধী পার্লামেন্ট সদস্যরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী সরবেন কি না, এ প্রশ্ন আর নতুন নয়, আলোচনার বিষয় হলো, কবে তিনি সরবেন?
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কনসারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা কমছে। অনেক সদস্য আর নির্বাচিত হয়ে আসতে পারবেন না। তারা এর জন্য জনসনকে দায়ী করছেন। বিশেষ করে যারা ইংল্যান্ডের উত্তরভাগের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। তাদের বলা হয় 'রেড ওয়াল সিট'-এর প্রতিনিধি। এই সব কেন্দ্রে লেবার পার্টি খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু সেখানকার ভোটদাতারা ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন বলে কনসারভেটিভ প্রার্থীরা জিতেছিলেন।
ইস্তফা দেবেন না জনসন
বুধবার পার্লামেন্টে ছিল প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার দিন। সেটা ছিল রীতিমতো উত্তপ্ত। জনসন জানান, তার ইস্তফা দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি তার সাবেক পরামর্শদাতার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। সাবেক পরামর্শদাতা ডমিনিক কামিংসের অভিযোগ ছিল, করোনাকালে পার্টি করা নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছিলেন জনসন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, 'নিজের মদ নিজে আনো পার্টি' যে লকডাউনের নিয়ম ভেঙে হবে, সেকথা তাকে কেউ বলেননি।
পার্লামেন্টে বিরোধী লেবার পার্টির কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন জনসন। লেবার পার্টির নেতারা বলেছেন, প্রতি সপ্তাহে জনসন উদ্ভট ও অবাস্তব যুক্তি দিচ্ছেন। তিনি কোনোভাবেই পার্টিগেটের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না।
জিএইচ/এসজি (রয়টার্স, এএফপি, এপি)