জার্মানিতে বিপাকে সবুজ দল
২৫ জুন ২০১৭বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পুরাতন যে সব ইস্যু নিয়ে দলটি এক সময় মানুষের কাছে যেতো, সেগুলো এখন বড় দলগুলোর দখলে৷ এর মাঝে নতুন কোনো ইস্যু নিয়ে তারা মাঠ দখলে রাখতে পারেনি৷
২০১১ সালে ফুকুশিমা পরমাণু দুর্ঘটনার পর দলটির জন সমর্থন ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়৷ এর পরের এই ছয় বছরে রক্ষণশীল শিবিরের চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং তাঁর মহাজোট জার্মানিতে পরমাণু জ্বালানি উৎপাদন বন্ধ করার কাজ শুরু করেন৷
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই ইস্যুর পরিবর্তে নতুন কিছু আনতে না পারায় পর সাম্প্রতিক দুটো নির্বাচনে তাদের জনসমর্থন ৬ শতাংশে নেমে এসেছে৷
সবুজ দলের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বর্তমানে অধ্যাপনায় থাকা হুবার্ট ক্লাইনার্ট বলেন, জ্বালানি নীতি এখন আর বিতর্কিত ইস্যু নয়৷ সবাই এখন জলবায়ু সুরক্ষা চায়৷ বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বিরুদ্ধেও কারও কোনো কথা নেই৷ সমস্যাটা বুদ্ধিবৃত্তিক নতুনত্বে৷ সবুজ দলের এখন নতুন এবং আকর্ষণীয় ইস্যু দরকার৷
দলটি এতটাই ইস্যু খরায় রয়েছে যে, সম্প্রতি এর চেয়ারপার্সন সংবাদপত্রে এক সাক্ষাৎকার দৈনন্দিন গৃহবর্জ্যের পৃথকীকরণ নিয়ে কথা বলেছেন৷
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী উলরিশ সারসিনেলি ডয়চে ভেলেকে বলেন, তারা নিজেদের সফলতার শিকার৷ তাদের সামনে আনা বিষয়গুলো অল্প সময়ের মধ্যে মিলিয়ে গেছে৷
ইস্যু ছাড়াও সবুজ দলের আরেকটা সংকট রয়েছে৷ সেটা হচ্ছে ক্যারিশম্যাটিক নেতার অভাব৷
জার্মানির সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগে আসন পেতে হলে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ ভোট পেতে হয়৷ তা না হলে দলটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না৷ সর্বশেষ জনমত জরিপ অনুসারে, তাই এই ৫ শতাংশের সীমারেখার কাছাকাছি রয়েছে তৃতীয় বৃহত্তম দল সবুজ দল৷
২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পায় দলটি৷ যাতে ৬৩০ আসনের মধ্যে ৬৩ আসন তারা পায়৷ এর আগে ২০০৯ সালের নির্বাচনে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিলো দলটি৷ অন্যদিকে ২০১৩ সালের নির্বাচনে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পায় সবুজ দল৷ সাম্প্রতিক জনমত জরিপ বলছে, তাদের জনপ্রিয়তা ৬ শতাংশ৷ ধারাবাহিকভাবে জনপ্রিয়তা কমায় দলটি সংসদে প্রতিনিধিত্বহীন হয়ে পড়তে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন৷
দীর্ঘদিন যাবৎ তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে ভূমিকা রেখেছে ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি) বা মুক্ত গণতন্ত্রী দল৷ সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ ভোট অর্জন করতে না পারায় ২০১৩ সালের নির্বাচনে তারা আসন পেতে ব্যর্থ হয়৷
তবে সব সমস্যা কাটিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারলে সবুজ দল বড় কোনো দলের সঙ্গে জোট বেঁধে রাষ্ট্র ক্ষমতার অংশীদার হতে পারে৷