পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে দিল্লিতে ‘অনশন ধর্না’
৩ অক্টোবর ২০১১গতকাল মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে দিল্লির রাজঘাটে গান্ধীর সমাধিস্থলে প্রতীকী অনশন ধর্নায় বসেন তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির প্রধান চন্দ্রশেখর রাও৷ পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন ইস্যুতে কেন্দ্রের দীর্ঘ টালবাহানা নিয়ে আজ তিনি প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন৷ অন্ধ্রপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গোলাম নবি আজাদ এবং অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এবিষয়ে আরো আলোচনার কথা বললে, তার প্রেক্ষিতে চন্দ্রশেখর রাও দিল্লিতে বলেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, আন্দোলন বন্ধ করতে বলার চেয়ে তাড়াতাড়ি তাঁদের দাবি মেনে নিতে৷ অনেক আলোচনা হয়েছে৷ আর নতুন করে আলোচনার কী আছে?'' তেলেঙ্গানা যৌথ সংগ্রাম কমিটির অপর নেতা কোড়ানদারম বলেন, ‘‘আমাদের ওয়ান পয়েন্ট অ্যাজেন্ডা৷ হায়দ্রাবাদ নিয়ে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য৷''
মনমোহন সিং সরকার উভয় সঙ্কটে৷ পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবি মেনে নিলে গোর্খাল্যান্ড এবং বিদর্ভের মত বহু জায়গায় পৃথক রাজ্যের দাবিতে নতুন করে আন্দোলন মাথা চাড়া দেবে৷ আবার তেলেঙ্গানা যৌথ সংগ্রাম কমিটিকে সরাসরি না বলতে পারছেনা কেন্দ্র৷ ২০০৪ সালে প্রথম ইউপিএ জোট সরকারে সামিল হয়েছিলেন তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির নেতা চন্দ্রশেখর রাও৷ মূলত এই আশায় যে, কেন্দ্র তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবি মেনে নেবে৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি৷ তাই জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি৷
এদিকে তেলেঙ্গানার সব কটি দলের যৌথ সংগ্রাম কমিটি গত ২০ দিন ধরে অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদ ও তেলেঙ্গানা অঞ্চলে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে৷ তেলেঙ্গানা এলাকা থেকে নির্বাচিত সাংসদ ও বিধায়করা গণ ইস্তফা দিয়েছেন৷ হায়দ্রাবাদসহ অন্ধ্রপ্রদেশের ১১টি জেলায় চলেছে বিক্ষোভ প্রতিবাদ৷ চলেছে দফা দফায় হরতাল ও কর্মবিরতি৷ বিপর্যস্ত হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ৷ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন পালন করছে কর্মবিরতি৷ গতকাল তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে আত্মহত্যা করেছে আরো একজন ছাত্রী৷ এই নিয়ে প্রায় ৬০০ - যাদের বেশির ভাগ পড়ুয়া আত্মহনন করলো৷
পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবি ঝুলে আছে বহুদিন৷ সেই ইন্দিরা গান্ধীর আমল থেকে৷ সমাধান-সূত্র বের করতে বসানো হয়েছিল কমিশন৷ সেই কমিশনের সুপারিশও হিমঘরে৷ কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার বাস্তবিকভবেই বিভ্রান্ত৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ