পোল্যান্ডে উদারপন্থি শিবিরের জয়
১৮ অক্টোবর ২০২৩সাম্প্রতিক কালে ইউরোপজুড়ে চরম দক্ষিণপন্থি শক্তির ধারাবাহিক উত্থান মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে৷ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়ার মতো দেশে এমন চরমপন্থি শক্তি ক্ষমতায় এসেছে৷ জার্মানির একাধিক আঞ্চলিক নির্বাচনে এঅফডি দলের সাফল্যও দুশ্চিন্তার কারণ হচ্ছে৷ গত রোববার পোল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে পিস পার্টির পরাজয়ের পর ইউরোপের অনেক নেতা আবার কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন৷ রেকর্ড ৭৪ শতাংশেরও বেশি ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করায় এই পরাজয় বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷
মঙ্গলবার সরকারি ফলাফল ঘোষণার পর বিরোধী নেতা ও ইউরোপীয় সরকার পরিষদের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড টুস্কের নেতৃত্বে তিন দলের জোট আগামী সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছে৷ সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেই দুদার উদ্দেশ্যে দ্রুত সরকার গড়ার আমন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছেন টুস্ক৷ পরাজিত ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি বা ‘পিস'-এর সহযোগী হিসেবে দুদা সেই পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ নির্বাচনের আগেই তিনি তিন দলের জোট সরকার গড়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ বিলম্বের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন৷ উল্লেখ্য, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও ‘পিস' দল সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে সংসদে থেকে যাচ্ছে৷ তবে অন্য কোনো দল তাদের সঙ্গে জোট গড়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছে না৷
প্রায় আট বছরের শাসনকালে ‘পিস' ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে একাধিক গুরুতর সংঘাত দেখা গেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৌলিক মূল্যবোধে আঘাত হানার দায়ে ইইউ পোল্যান্ডের উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে৷ ব্রাসেলসের অভিযোগ, আইনের শাসন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘুদের অধিকার ও অভিবাসনের ক্ষেত্রে পোল্যান্ডের বিদায়ী সরকারের বিতর্কিত পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক কাঠামোর পরিপন্থি৷ ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আইনি সংঘাত চলছে৷ টুস্ক প্রধানমন্ত্রী হলে সেই সংঘাতের অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
টুস্কের নেতৃত্বে জোট সত্যি সরকার গড়তে পারলেও পোল্যান্ডের অনেক চলমান সমস্যা সমাধানে বেশ বেগ পেতে হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন৷ প্রতিবেশী ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা থেকে শুরু করে দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার মতো অনেক বিষয় নতুন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তবে অনেকের মতে, ‘পিস'-এর অনেক পদক্ষেপ বাতিল করে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ‘মেরামতি' সবচেয়ে দুরূহ কাজ হবে৷ পোল্যান্ডকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চান ডনাল্ড টুস্ক৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)