প্যালেস্টাইন প্রশ্নে পশ্চিমের ভাবনায় পরিবর্তন চান বিশেষজ্ঞ ল্যুডার্স
২২ সেপ্টেম্বর ২০১১নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রস্তাব ওঠানো হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর ভিটো প্রয়োগের কথা ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে৷
জার্মানি চায়, ফিলিস্তিন পক্ষ ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার পথ ধরেই স্বাধীন রাষ্ট্রের পথে এগিয়ে যাক৷ জার্মান বিশেষজ্ঞরাও এই ইস্যু নিয়ে মতামত দিচ্ছেন৷ মিশায়েল ল্যুডার্স তাঁদেরই একজন৷ তিনি মনে করেন ইসরায়েল আর প্যালেস্টাইন প্রশ্নে পশ্চিমের দেশগুলি যে নীতি অনুসরণ করে আসছে তা বদলানোর সময় উপস্থিত৷ তাঁর মতে দশকের পর দশক ইসরায়েল যে যুক্তিটা সরবরাহ করে এসেছে সেটাই মান্য করেছে ইউরোপীয় ও অ্যামেরিকানরা৷ এবং এই যুক্তিটা হল: ইসরায়েল তো শান্তি চায়৷ কিন্তু ফিলিস্তিনি ও আরবরা এবং হালে ইরানিরা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে আছে৷ ফলে ইসরায়েল কোন আপোশ করতে পারছেনা৷ ল্যুডার্স বলছেন, এই-যে ছবিটা ইসরায়েল পশ্চিমি দুনিয়াকে দিয়ে রেখেছে, সেটায় সাঙ্ঘাতিক ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক আরব বিপ্লব৷ তাঁর ভাষ্য: ‘‘পরিস্থিতিটা এখন পাল্টে গেছে৷ মিসরে হোসনি মুবারক আর নেই, যিনি কিনা শান্তিপ্রক্রিয়ার প্রহসনটাকে জিইয়ে রাখতে সাহায্য করবেন৷ বেগবান এক গতি এসেছে এখন৷ ফিলিস্তিনিরাও তাদের অধিকার দাবি করছে৷ তারাও সেটাই করছে ইসরায়েল যা ৪৭,৪৮ সালে করেছিল৷ তারা এককভাবে তাদের রাষ্ট্রের ঘোষণা দিচ্ছে এই আশায় যে জাতিসংঘ তাদের সমর্থন করবে৷''
মিশায়েল ল্যুডার্স বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইস্রায়েল সমর্থক লবির প্রভাব এতটাই জোরালো যে এই লবির বিরুদ্ধে গিয়ে রাজনীতি করা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পক্ষে সম্ভব নয়৷ আর জার্মানি স্বীকৃতির প্রশ্নে ইসরায়েলের সঙ্গে তার বিশেষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করছেনা৷ প্যালেস্টাইন প্রশ্নে ইসরায়েলের অনড় অবস্থানের কারণ হিসেবে ল্যুডার্স উল্লেখ করেছেন, ইসরায়েলে আসীন সরকারে উগ্র জাতীয়তাবাদীদেরই আধিপত্য এবং তারা কোনমতেই পশ্চিম জর্ডানে ও গাজা ভূখণ্ডে একটি প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র গড়ে উঠতে দিতে চায়না৷ এখনকার ইসরায়েল সরকার ফিলিস্তিনি বাস্তবতাটাকে অগ্রাহ্য করছে বলে তিনি মনে করেন৷ তিনি চান, মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পশ্চিমি দুনিয়ার নীতির ক্ষেত্রে দিকবদল হওয়া জরুরি৷
ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব জাতিসংঘ ফোরামে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তাকি আখেরে তাদের ক্ষতি করবে নাকি তা থেকে তারা লাভবান হবে? বিশেষজ্ঞ ল্যুডার্স মনে করেন, প্রাথমিকভাবে তাদের ক্ষতিই হবে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক দিক থেকে৷ কারণ অ্যামেরিকা প্যালেস্টাইন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাতা দেশ৷ তবে এবার ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কোন ফায়দা হবেনা বলে তাঁর ধারণা৷ তবে তাঁর আশঙ্কা, ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপ মাত্রাধিক হলে পশ্চিম জর্ডান আর গাজা এলাকায় সহিংস সংঘর্য ঘটবার ঝুঁকিটাও বাড়বে৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন