1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রকৃতির কোলে মানুষের রূপ

Sanjiv Burman২৫ আগস্ট ২০১৭

আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে মানুষ যেন প্রকৃতি থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে৷ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দুই শিল্পী এক অভিনব প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সংযোগ সৃষ্টি করছেন৷ বয়স ও অভিজ্ঞতাকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা৷

https://p.dw.com/p/2io8q
Schweiz Val Bondasca
ছবি: Imago/imagebroker

প্রথম দর্শনে মনে হবে নির্মল প্রকৃতি, কিন্তু ভালো করে দেখলে চোখে পড়বে নিঃসঙ্গ এক চরিত্র, যে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে রয়েছে৷ ‘আইজ অ্যাজ বিগ অ্যাজ প্লেটস' নামের সিরিজের প্রত্যেকটি ফটো পর্যবেক্ষককে একটা ভিন্ন কল্পনার জগতে নিয়ে যায়৷

এই প্রকল্পের জন্য নরওয়ের কারোলিনে ইয়র্ট ও ফিনল্যান্ডের রিটা ইকোনেন গোটা বিশ্বে প্রকৃতির কোলে মানুষের ছবি তুলছেন৷ নর্ডিক উপকথা ও পুরাণের গল্প থেকে প্রেরণা নিয়েছেন তাঁরা৷ রিটা বলেন, ‘‘প্রকল্পের শুরুতেই এমনটা হয়েছিল৷ আমরা প্রকৃতির অনেক রূপের মনুষ্য রূপ খুঁজছিলাম৷ যেমন দেখছিলাম, একটি পাথরকে কীভাবে জীবন্ত করে তোলা যায়, মানুষ কীভাবে প্রকৃতির নানা ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়৷ তারপর কয়েক বছর ধরে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি৷ জানতে চেয়েছি, তারা কীভাবে তাদের পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে একাত্ম হয়?''

মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সংযোগ

আইসল্যান্ডে শুটিং চলছে৷ কারোলিনে ইয়র্ট ও রিটা ইকোনেন দু'জনে মিলে প্রত্যেকটি ছবি সৃষ্টি করেন৷ ইকোনেন আশেপাশের এলাকার উপকরণ দিয়ে তৈরি বহনযোগ্য ভাস্কর্যের দায়িত্ব পালন করেন৷ ইয়র্ট শুধু ছবি তোলেন৷ তাঁদের মডেলরা পেশাদার নন৷ পারিশ্রমিক ছাড়াই তাঁরা এই প্রকল্পে অংশ নিচ্ছেন৷ তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই অবসর নিয়েছেন৷ কারোলিনে ইয়র্ট বলেন, ‘‘ছবি তোলার সময় এই বয়সের মানুষের মধ্যে স্বাধীনতা, মুক্তির একটা আলাদা বোধ দেখা যায়৷ তাঁদের জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে, অনেক গল্প রয়েছে৷ তাই তারাই বোধহয় বেশি ইন্টারেস্টিং মানুষ৷''

দুই শিল্পী কাকতালীয়ভাবে মডেলদের দেখা পান অথবা বৃদ্ধাবাসে কোনো অনুষ্ঠানে গিয়ে তাদের খুঁজে নেন৷ আইসল্যান্ডের লিসা কিয়ার্টানডোটির এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মডেল হয়েছেন৷ অবসরপ্রাপ্ত এই মানুষটি বছর চারেক আগে এক সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়েছিলেন৷ লিসা বলেন, ‘‘মানুষ ও প্রকৃতি চিরকাল পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত৷....অথচ মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে নিজেদের দূরত্ব বাড়িয়ে চলেছে৷ তাই আমার বিষয়টি রোমাঞ্চকর লাগে৷''

২০১১ সাল থেকে কারোলিনে ইয়র্ট ও রিটা ইকোনেন ১০টি দেশে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের ছবি তুলেছেন৷ ফটো তোলার মুহূর্তগুলি ধরে রাখা তাঁদের মূল উদ্দেশ্য নয়৷ প্রত্যেক শুটিং তাঁদের কাছে অনবদ্য৷ প্রথাগত শিল্প প্রকল্পের তুলনায় এই অভিজ্ঞতা একেবারেই ভিন্ন৷ কারোলিনে ইয়র্ট বলেন, ‘‘এটা আসলে একটা উপকথা, নরওয়েজীয় বা নর্ডিক উপকথা৷ এক যে ছিল কোবল্ড, যার চোখ প্লেটের মতো বড়৷ কিন্তু এর এক আলাদা মাত্রা রয়েছে৷ এই প্রকল্পের কারণে যে সব মানুষের সঙ্গে দেখা হয়, তাদেরও যাকে বলে ‘ওপেন স্পিরিট' ও গভীর কৌতূহল রয়েছে৷ ফলে তারা একেবারে খাপ খেয়ে গেছেন৷''

শুটিং-এর সময় এই দুই শিল্পী মানুষের ব্যক্তিগত গল্প-অভিজ্ঞতাকেও অত্যন্ত গুরুত্ব দেন৷ ছবির প্রেক্ষাপট বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও তাঁরা সেই গল্প থেকে প্রেরণা পান৷ কারোলিনে বলেন, ‘‘আমরা কীভাবে আমাদের পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করে তুলি, সেই বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করছি৷ কিন্তু সেই অনুসন্ধানের কাজে কয়েক দশক লেগে যেতে পারে৷ পারিপার্শ্বিক সম্পর্কে মনে একটা বিনয় জাগে৷ অচেনা মানুষের কাছ থেকে শেখার স্পৃহা জন্মায়৷''

‘আইজ অ্যাজ বিগ অ্যাজ প্লেটস' প্রকল্পের মাধ্যমে কারোলিনে ইয়র্ট ও রিটা ইকোনেন মানুষকে থমকে দাঁড়িয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করেন৷ ছবির মডেল ও পর্যবেক্ষক – দু'জনেরই সেই উপলব্ধি হয়৷

গ্যোনা কেটেলস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান