সাংবাদিক শওকত মাহমুদ রিমান্ডে
২০ আগস্ট ২০১৫ফেসবুকে ‘স্ট্যাটাস' দেয়ার কারণে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সাংবাদিক প্রবীর সিকদার৷ স্ট্যাটাসে লেখা হয়েছিল, প্রবীর তাঁর জীবন নিয়ে শঙ্কিত৷ সেখানে আরো লিখেছিলেন, তাঁর মৃত্যু হলে মৃত্যুর জন্য এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি, ‘রাজাকার নুলা মুসা' ওরফে ড. মুসা বিন শমসের এবং ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার ওরফে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ দায়ী থাকবেন৷ এর প্রতিক্রিয়ায় গত রবিবার প্রবীর সিকদারকে ঢাকার কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ফরিদপুর সদর থানায় তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়৷ তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন স্থানীয় আদালতের এপিপি স্বপন পাল৷ মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রবীর সিকদারের ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ অন্যান্যদের সম্মান হানি হয়েছে৷ প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই সারাদেশ প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ তারপরও তাঁকে রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ৷ তবে বুধবার তাঁকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়৷ টুইটারে অনেকেই শেয়ার করেছেন এ খবর৷
প্রবীর সিকদারের মুক্তিতে অনেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন৷
আমার ব্লগে গৌতম হালদার লিখেছেন, ‘‘প্রবীর সিকদাররা সব সময়ে জাতির হিতার্থে নিবেদিত প্রাণ৷ তাঁরা জাতির জন্য যা কিছু করে, মন থেকেই করে৷ কোনো হালুয়া রুটির জন্য লোভাতুর হয়ে করে না৷ তবে প্রবীর সিকদারদের সমস্যাটা হয় বারবার অন্য কারনে৷ নির্মোহ এই সিকদাররা বারবারই ভুলে যায় এই বাংলাদেশে সবাই তার বা তাদের মতো ক্ষুধা, তেষ্টা পরিহার করে বাঁচতে পারে না৷ সবার ক্ষিদে আছে৷ তেষ্টা আছে৷ আছে ক্ষমতায় যাবার, ক্ষমতা দেখানোর আর ক্ষমতা ধরে রাখার সতত চেষ্টা৷ আর এই কাজে প্রবীর সিকদারদের সততা নিসন্দেহে বড় বাধা৷''
এ অবস্থায় তাঁর প্রশ্ন, ‘‘প্রবীর সিকদাররা জেল খাটবে না তো কি ক্ষমতালোভী, দখলদার, লুটেরা আর রাজাকাররা জেল খাটবে?''
তবে প্রবীর সিকদার জামিনে মুক্তি পেলেও সাংবাদিক নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শওকত মাহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ৷ মঙ্গলবার পান্থপথ থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তাঁকে গ্রেপ্তার করে৷ শওকত মাহমুদ ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-র একাংশের সভাপতি এবং বিএনপির কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক৷ তাঁকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং উপজেলায় কাল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে স্থানীয় বিএনপি৷ তবে সামাজিক ফেসবুক, টুইটারে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি৷
এদিকে ব্লগার হত্যার জন্য নিন্দা এবং বিচারের দাবি এখনো বিশ্বজুড়েই চলছে৷ সম্প্রতি ভয়েস অফ অ্যামেরিকা এক প্রতিবেদনে লিখেছে, একের পর এক ব্লগার হত্যার ঘটনা থেকেই বোঝা যায় বাংলাদেশে মত প্রকাশ করতে যাওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি৷
সরকারের প্রতি ব্লগার রক্ষায় আরো তৎপর হওয়ার দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন এখনো সোচ্চার৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ