প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যু
২১ এপ্রিল ২০১২জাতিসংঘের মিলেন্নিয়াম উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রসবকালে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি বছর শতকরা ৫.৪ ভাগ করে কমিয়ে আনতে হবে৷ তবে বাংলাদেশ তার তিন বছর আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে এই হার নামিয়ে এনেছে প্রতি বছর শতকরা সাড়ে পাঁচ ভাগে৷ আগের চেয়ে উন্নত মানের চিকিৎসা ও প্রসব সুবিধার কারণে এই সাফল্য এসেছে৷ এজন্য গত প্রায় দুই যুগ ধরে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের ধাত্রী ও স্ত্রীরোগ বিদ্যা সমিতি বা ওজিএসবি৷ জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল ইউএনএফপিএ-র সহায়তায় ওজিএসবি বাংলাদেশের নানা জায়গাতে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে পেশাদার ধাত্রী তৈরির জন্য৷ পাবনা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ফারহাত হোসাইন মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসের পেছনে সাফল্যের প্রধান কারণ হিসেবে ওজিএসবি এবং দক্ষ ধাত্রীদের অবদানকে উল্লেখ করেন৷
বিগত ২০০১ সালে বাংলাদেশের মাত্র শতকরা নয় ভাগ গর্ভবতী নারী সন্তান প্রসবের সময় চিকিৎসক কিংবা পেশাদার ধাত্রীর সহায়তা নিতেন৷ দশ বছরের মধ্যে সেই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ২৩ ভাগে৷ সংশ্লিষ্টদের আশা, আগামী ২০১৫ সালের মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগ গর্ভবতী নারীই সন্তান প্রসবের সময় আধুনিক চিকিৎসার শরণাপন্ন হবেন৷ অধ্যাপক ফারহাত হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ জায়গা এমনকি গ্রামে গঞ্জেও এখন দক্ষ ধাত্রীর খোঁজ মেলে৷
তবে এখনও বহু নারী রয়েছেন যারা পরিবারের চাপে বাসাতেই সন্তানের জন্ম দেন৷ বাংলাদেশে প্রতি বছর অন্তত ২৪ লাখ নারী ঘরেই সন্তানের জন্ম দেন কোন আধুনিক ব্যবস্থা ছাড়াই৷ ড. ফারহাত হোসাইনের মতে, গর্ভাবস্থায় যে কোন জটিলতা এড়ানোর জন্য প্রসূতি নারীর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়৷ উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সাত হাজার দক্ষ ধাত্রী কাজ করছেন অন্তত দশ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী