প্রাণীর ভ্রুণে হৃদস্পন্দন শুরুর আগে হৃদযন্ত্রের ছবি
৯ এপ্রিল ২০১০বিজ্ঞানের সাফল্য এতো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে যে আমাদের কল্পনা শক্তিও তার কাছে হার মেনে যায়৷ প্রাণীর ভ্রুণের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে, হৃদস্পন্দন শুরুর আগের হৃদযন্ত্রের ছবি কি কেউ কল্পনা করতে পারেন? হ্যাঁ ,গবেষকরা এখন সেই ভিডিও চিত্রও ধারণ করছেন৷
নতুন অনেক কিছুই আবিষ্কৃত হচ্ছে৷ এমন অনেক অজানাকে জানছি যা আগে অসম্ভব বলে মনে হতো৷ নিত্যনতুন উদ্ভাবনে প্রায়ই আমরা রোমাঞ্চিত হচ্ছি৷ গবেষক বিজ্ঞানীরা বহু সময় ব্যয় করছেন বিজ্ঞানকে এগিয়ে নেয়ার কাজে৷ বিজ্ঞানের কাছে হার মেনে যাচ্ছে আমাদের কল্পনা শক্তি৷ সেইরকমই আরেকটি ঘটনা৷
প্রাণীর ভ্রূণের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়৷ স্তন্যপায়ী প্রাণীর গর্ভধারণের প্রথম কুড়ি দিন একটি জটিল সময়৷ গবেষণা চালানো হয়েছে গর্ভবতী ইঁদুরের ভ্রূণের ওপর৷ গবেষকরা অপটিক্যাল কোহেরেন্স টমোগ্রাফি বা ওসিটি প্রযুক্তি ব্যাবহার করে, ইঁদুরের গর্ভধারণের প্রায় সপ্তম দিনের মাথায় তাদের ভ্রূণের ভিডিও চিত্র ধারণ করেছেন৷ এবং সেখানে প্রথম হৃদস্পন্দন শুরুর আগেই ধরা পড়েছে হৃদযন্ত্রের ছবি৷ আশ্চর্য লাগছে কি? না আশ্চর্য হবার কিছু নেই৷ যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক এবং বেলর কলেজ অব মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের যৌথ সহযোগিতায় ঠিক এই কাজটিই করা হচ্ছে৷ ভ্রূণের হৃদপিন্ডের প্রথম স্পন্দনের আগে একটি প্রাণকে কেমন দেখায়, সেই কল্পনার ছবিটি বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে সত্যি হয়ে ধরা যাচ্ছে ভিডিও চিত্রে৷
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের কালেন কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং -এর বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সহযোগী অধ্যাপক কিরিল ল্যারিন এবং টেক্সাস মেডিক্যাল সেন্টারে কর্মরত তাঁর সহকর্মীরা স্তন্যপায়ী প্রাণীর হৃদযন্ত্র গঠনের চিত্র ধারণ করেছেন৷ তবে এই চিত্র ধারণের ক্ষেত্রে তাঁরা ব্যাবহার করেছেন ক্ষতিকারক নয় এইরকম উচ্চ শক্তি সম্পন্ন ডিভাইস৷ কোন জীবদেহ তৈরির এত প্রাথমিক স্তরের মানসম্পন্ন ছবি এর আগে আর পাওয়া যায়নি৷
অধ্যাপক ল্যারিন এবং তাঁর সহকর্মীরা বেলর কলেজ অব মেডিসিনের ডিকিনসন ল্যাবে অপটিক্যাল কোহেরেন্স টমোগ্রাফি বা ওসিটি প্রযুক্তি ব্যাবহার করে দেখেছেন, হৃদযন্ত্র বা হৃদস্পন্দনের কোন অস্বাভাবিকতা রয়েছে কিনা৷
অধ্যাপক কিরিল ল্যারিন বলেন, ভ্রূণের হৃদপিন্ডের প্রথম স্পন্দনের আগেই ভিডিও চিত্র ধারণের একদিন পর আমরা দেখেছি হৃদযন্ত্র একটি টিউবের মত গঠন নিতে শুরু করে৷ এরপরই আমরা দেখি হৃদযন্ত্রের নিলয় সঙ্কুচিত হচ্ছে কিনা৷ এরপরই আমরা রক্তের সঞ্চালন এবং হার্ট রেট দেখতে শুরু করি৷
আসলে অধ্যাপক ল্যারিন এবং তাঁর সহযোগীরা দেখতে চেয়েছেন, কিভাবে বিভিন্ন জিনের রূপান্তর কার্ডিওভাসকুলার গঠনে প্রভাব ফেলে এবং তাঁদের আরো একটি লক্ষ্য হল অস্বাভাবিকতা নিয়ে শিশু জন্মের হার হ্রাস করা৷ সর্বোপরি তাঁরা দেখতে চান কিভাবে জন্মের আগেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা প্রতিহত এবং নিরাময় করা যায়৷
প্রতিবেদক : ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারুক