প্লাস্টিক দূষণ - এ সমস্যার শেষ কোথায়?
যেদিকেই চোখ যায় শুধু প্লাস্টিক চোখে পড়বে। শিশুরা প্লাস্টিকের বর্জ্যের মধ্যে খেলছে, প্রাণীরা গিলে ফেলছে এবং নদী থেকে ভেসে আসা প্লাসটিকে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে সমুদ্রের তলদেশ। এত কিছুর পরও, প্লাস্টিকের উৎপাদন বাড়ছে।
মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য আবর্জনায় ভরা
প্লাস্টিক নির্মাণকাজ এবং প্যাকেজিংয়ের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু এটি বর্তমানে একটি বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হয়েছে। প্লাস্টিকের বোতল, ব্যবহৃত টায়ার এবং শতশত টন বর্জ্য বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ভিসগ্রাডের কাছে ড্রিনা নদীতে আটকে একটি ভাসমান ভাগাড় তৈরি করেছে।
আবর্জনার মধ্যে খেলাধুলা
ফিলিপাইন্সের এই সৈকতে জলোচ্ছ্বাসের কারণে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্যের উপরেই খালি পায়ে খেলতে দেখা যায় শিশুদের। অসতর্কভাবে ফেলে দেয়া আবর্জনাটি সমুদ্রে পৌঁছানোর আগে প্রবাহিত হয়েছে নদীর মধ্য দিয়ে। কিন্তু শুধু পানিই যে দূষিত হচ্ছে তা নয়, জলজ প্রাণীরাও ঝুঁকিতে রয়েছে।
অন্তত একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ কমেছে
ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইয়োর বিখ্যাত কোপাকাবানা সৈকতের কাছে সমুদ্র থেকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ তুলে এনেছেন নিনা গোমেজ । প্রতি বছর, দেশটি আনুমানিক এক কোটি ১৩ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন করে, যার মধ্যে মাত্র ১.২% পুনরায় ব্যবহারযোগ্য। সেই প্লাস্টিক বর্জ্যের বেশিরভাগই সমুদ্রে গিয়ে পড়ে, যা সামুদ্রিক পরিবেশকে বিপন্ন করে।
সাময়িক সমাধান
সাউথ আফ্রিকার আলেকজান্দ্রা শহরে জুক্সকাই নদীতে একটি জাল দিয়ে প্লাস্টিকের বাঁধ তৈরি করেছে। এই স্বেচ্ছাসেবকরা জালে আটকে থাকা বর্জ্য অপসারণ করছেন। কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপ সাময়িক সমাধান, কারণ, প্রতিনিয়তই নতুন বর্জ্য আসছে।
ভারতে প্রতি বছর ৩৫ লাখ টন প্লাস্টিকের বর্জ্য
ভারতের মুম্বাইয়ের আরব সাগর উপকূলের বাধওয়ার পার্ক সৈকতে প্লাস্টিকের বর্জ্যে বালি ঢেকে গেছে। ১৪০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশ ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লাস্টিক ব্যবহারকারী দেশগুলোর একটি। পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটি প্রতি বছর প্রায় ৩৫ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন করে, যার একটি ক্ষুদ্র অংশ পুনরায় ব্যবহার করা হয়।
সমাধানের আশা
নেপালের কাঠমাণ্ডুর গোকর্ণেশ্বর মন্দিরে কুসে আউন্সি উৎসবের সময় উপাসকদের রেখে যাওয়া আবর্জনার মধ্যে বসে আছেন একজন পুরোহিত। একটি বিষয় পরিষ্কার, প্লাস্টিক সংকট সমাধানের জন্য সাহসী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও এর ব্যবহার বিশ্বব্যাপী পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। দ্রুত ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ না নিলে প্লাস্টিক নদী ও মহাসাগরকে দূষিত করতে থাকবে, জীবন ও জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলবে এবং একটি টেকসই ভবিষ্যৎকে বাধা দেবে।