ফাইন ডাস্টের সঙ্গে যুদ্ধ
২৩ জানুয়ারি ২০১৭লাইপসিশ – অন্যান্য বড় শহরের মতোই বাড়ছে এবং বদলে যাচ্ছে৷ এক অদৃশ্য বিপদও বাসা বাঁধছে এখানে: ফাইন ডাস্ট৷ বিশেষ করে শহরের ভেতরে ফাইন ডাস্টের মাত্রা অনেক বেশি৷ মাত্রাতিরিক্ত গাড়ি চলাচলের জন্য এই অবস্থা৷ শহরটাকে বসবাসের জন্য ভালো জায়গা নয় বলে মনে করেন পদার্থ বিজ্ঞানী এবং সুস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষক উলরিশ ফ্রাঙ্ক৷ তিনি ফাইন ডাস্টের প্রভাব বিষয়ক বিশেষজ্ঞ৷ তিনি বলেন, পিক আওয়ারে রাস্তায় ভিড় বেড়ে যায় এবং গাড়ি থেকে ধোঁয়াও অনেক বেশি নির্গত হয়৷ ফলে অনেক ডাস্ট তৈরি হয়৷ মোটের উপর টায়ার, ব্রেক আর গাড়ি থেকে নির্গত পদার্থ থেকেও অনেক পার্টিকেল উৎপন্ন হয়৷
আশ্চর্যজনক হচ্ছে, এসব পার্টিকেল যে বড় ঝুঁকি তৈরি করছে, তা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো আইন এখনো নেই৷ গত এক বছর ধরে গবেষকরা লাইপসিসে জরুরি সাহায্যের জন্য আসা কলগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন৷ এখানে আল্ট্রা ফাইন ডাস্ট লেভেল এবং রোগীদের মধ্যে একটি সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন তারা৷
বিশ্বের অনেক জায়গা অবশ্য এখানকার চেয়েও বেশি দূষিত৷ উলরিশ ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘‘ভারত, চীন কিংবা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ফাইন ডাস্টের কারণে রোগবালাইয়ের মাত্রা অনেক বেশি৷ মৃত্যুসহ অনেক রোগের ঝুঁকিও সেসব দেশে বেশি৷ শ্বাসযন্ত্রের রোগ কিংবা কার্ডিওভাসকুলারের মতো রোগের পাশাপাশি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে ফাইন ডাস্টের কারণে৷''
গবেষকরা ঘরের মধ্যে ফাইন ডাস্টের মাত্রা নিয়েও গবেষণা করেছেন৷ তারা বুঝতে চেয়েছেন, এর ফলে শিশুদের মধ্যে ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ছে কিনা৷ দেখা যাচ্ছে, ঝুঁকি বেড়েছে, বিশেষ করে যদি শিশুটির অ্যাপার্টমেন্টে ধূমপান করা হয় কিংবা সেটি বড় রাস্তার পাশে হয়৷ দু'টো কারণেই ঘরের মধ্যে আল্ট্রাফাইন ডাস্টের পরিমাণ বাড়তে পারে৷
গবেষকরা আরো বের করেছেন, লাইপসিশের কোথায় ফাইন ডাস্ট বেশি, এবং কোথায় কম৷ উলরিশ ফ্রাঙ্কের কথায়, ‘‘লাইপসিশের বিস্তীর্ন সবুজ এলাকা শুধু ফ্রেশ অক্সিজেনের উৎস নয়, একটি লম্বা করিডোরও যা দূষণকে দূর করে বিশুদ্ধ বাতাসের সংস্থান করে৷''
ওপেন আর্বান স্পেসও ফাইন ডাস্টের প্রভাব কমাতে সহায়ক, কেননা, এটি ভালো ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করে এবং গাড়ির চাপ কমায়৷ সুতরাং শহরের মধ্যে চাইলে ফাইন ডাস্টের উপস্থিতি কমানো সম্ভব৷ উলরিশও শহরবাসীদের বিশুদ্ধ বাতাসের স্বাদ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন৷
মারিয়া লেসার/এআই